
সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। টানা দুদিন দমকা হাওয়া ও বৃষ্টির পাশাপাশি অস্বাভাবিক জোয়ার প্রবাহিত হচ্ছে নদনদীর পানিতে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, ভেঙে পড়েছে সড়ক, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষিজমি ও মাছের ঘের। বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। এ পরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপকূলের জনজীবন।
লক্ষ্মীপুরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, বেড়েছে নদীভাঙন
টানা বৃষ্টি ও মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে লক্ষ্মীপুরের রামগতি, কমলনগর ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুদিন ধরে মেঘনার পানি চার থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে দুর্ভোগে পড়েছে কয়েকশ পরিবার। নদীতে ভাটা পড়লে কিছুটা পানি নামছে। তবে জোয়ারের সময় আবার তা বেড়ে যাচ্ছে।কমলনগরের চরকালকিনি, চরফলকন, সাহেবের হাট, পাটোয়ারীর হাট, চরমার্টিন, চরলরেঞ্চ, রামগতির আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চরগাজী, চরআবদুল্লাহ এবং সদর উপজেলার চররমণীমোহন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব এলাকায় পুকুর ও মাছের ঘের ডুবে গেছে। নষ্ট হয়েছে ফসল। পানি উঠেছে অনেক ঘরের উঠানে। বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের সময় নদীর পানি সরাসরি লোকালয়ে ঢুকছে।
স্থানীয়রা জানান, অন্তত ১২টি এলাকায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। চরফলকন এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষেতের সবজি পানির নিচে। লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান বলেন, আগামী কয়েক দিন নদীর পানির উচ্চতা আরও বাড়তে পারে। পিরোজপুরে ডুবেছে শতাধিক গ্রাম পিরোজপুরে নদনদীর পানি অস্বাভাবিক বেড়েছে। হালকা দমকা বাতাস, জোয়ারের পানি ও টানা বর্ষণের ফলে প্লাবিত হয়েছে সাত উপজেলার শতাধিক গ্রাম। পিরোজপুর সদর উপজেলা, পৌরসভা, ইন্দুরকানী, কাউখালী, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়েছে।জানা গেছে, জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কঁচা, বলেশ্বর, কালিগঙ্গা, তালতলা, মধুমতী ও সন্ধ্যা নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে চার-পাঁচ ফুট বেড়েছে। ফলে তীরবর্তী গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। নদীভাঙনও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান জানান, পানিবন্দি পরিবারকে সর্বাত্মক খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। মৎস্যচাষিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।