ভুটানের সফররত প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সম্মানে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নৈশভোজের আয়োজন করেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তোবগে শনিবার সকালে দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেন।
নৈশভোজে প্রধান উপদেষ্টা অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। নৈশভোজ মনোঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
নৈশভোজে বক্তব্য প্রদানকালে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের গভীর এবং ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদে সংহতি, সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। অদ্ভুত মিলের কারণে, তিনি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমার প্রথম সাক্ষাৎকারী অতিথি ছিলেন, এবং সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম। তিনি অত্যন্ত চমৎকার মানুষ।’
প্রধান উপদেষ্টা তোবগেকে ‘একজন নিবেদিত নেতা’ এবং ‘বিশ্বদৃষ্টিকোণসম্পন্ন’ হিসেবে প্রশংসা করে বলেন, ‘সমগ্র ভুটান বাংলাদেশে চমৎকার বন্ধু।’ তিনি স্মরণ করেন, বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ভুটানের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ছিল এবং এটি আজও একটি ‘চিরন্তন সংহতির নিদর্শন’, যা পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে দুই দেশের সম্পর্ককে প্রভাবিত করছে।
অধ্যাপক ইউনূস উভয় দেশের যৌথ ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর জোর দিয়ে বলেন, সম্পর্কের ভিত্তি রয়েছে ‘বাংলার অসংখ্য ভিক্ষু ও বৌদ্ধ পণ্ডিতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধায়’, যাদের প্রভাব আজও দুই দেশের সম্পর্ককে দৃঢ় রাখছে। তিনি উল্লেখ করেন, দুই দেশের মানুষের মর্যাদা, সমষ্টিগত কল্যাণ এবং জনগণের সমৃদ্ধি অর্জনের সাধারণ অঙ্গীকার সম্পর্কের মূলভিত্তি।
তিনি বলেন, ‘আপনি বাংলাদেশের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সফরে এসেছেন, যখন আমরা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত পার করছি। গণতান্ত্রিক শাসনকে শক্তিশালী করা, প্রতিষ্ঠান পুনর্জীবিত করা এবং উন্নয়নকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত করা—এটাই আমাদের সামনে থাকা বড় চ্যালেঞ্জ।’