সরকারি চাকরির আবেদন ফি পুনর্নির্ধারণদেশ গড়ার দায়িত্ব তরুণদের হাতে তুলে দিতে চাইশহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটির’ ডাক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের৪৩তম বিসিএসের নতুন প্রজ্ঞাপন জারি, ফের বাদ ১৬৮ জনইথিওপিয়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৬৬
No icon

গ্যাস-সংকট আরও বাড়বে, উদ্বেগে পেট্রোবাংলা

দেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জ্বালানির সংকট। বিশেষ করে গ্যাসের জোগান নিশ্চিত করা বাংলাদেশ তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলার) জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। একদিকে দেশীয় উৎস থেকে গ্যাসের জোগান দিন দিন কমছে। অন্যদিকে শিল্প কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আবাসিক গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। উচ্চমূল্যে লিকুইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে এ সংকটের আপাতত সমাধান করা গেলেও রয়েছে প্রচণ্ড আর্থিক সংকট। এ ছাড়া চাইলেও বেশি পরিমাণে এলএনজি আমদানি করা যাবে না অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে। ফলে আগামী বছরের শুরুতেই গ্যাস সরবরাহে বড় হোঁচট খাওয়ার শঙ্কায় আছে পেট্রোবাংলা।  আটটি গ্রাহক শ্রেণিতে প্রতিদিন গ্যাসের অনুমোদিত লোড প্রায় ৫ হাজার ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। অথচ এলএনজিসহ সরবরাহ করা হচ্ছে গড়ে ২ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্যাস সংকটে এরই মধ্যে প্রায় ৩০০ শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। সামনে আরও অনেক শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর মধ্যেই আগামী বছরের শুরুতেই গ্যাস সংকট আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।পেট্রোবাংলার দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে, এখন শীত মৌসুম চলায় গ্যাসের সংকট থাকলেও সেটা তেমন একটা টের পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আসন্ন গ্রীষ্মে বিশেষ করে আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাসের চাহিদা অনুযায়ী জোগান নিশ্চিত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তারা বলছেন, অন্য বছরগুলোয় গ্রীষ্মকালীন চাহিদাকে বিবেচনা করে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া গেলেও এ বছর কিছুটা ব্যতিক্রম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, গ্যাস সরবরাহে পেট্রোবাংলার চ্যালেঞ্জগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরে জ্বালানি বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখন জ্বালানি বিভাগের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে সংকট মোকাবিলায় পেট্রোবাংলার পরিকল্পনা। এ কর্মকর্তা বলেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহ সংক্রান্ত বিষয়ে জ্বালানি বিভাগে চিঠি দেওয়া হলেও সামগ্রিক বিবেচনায় সেটা বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তিনি বলেন, আগের রাজনৈতিক সরকারের সময়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা গেলেও বিদ্যমান বাস্তবতায় সিদ্ধান্ত পেতেও সময় লাগছে। সবাই এখন খুবই ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। বিশেষ করে কর্মকর্তাদের বার বার বিবেচনা করতে হচ্ছে, কোনো সিদ্ধান্তের কারণে পাছে বিপদে না পড়েন।নানামুখী সংকটে দেশের জ্বালানি খাত। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে প্রতিনিয়ত গ্যাসের জোগান কমছে। জ্বালানি পণ্যের (তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি) পর্যাপ্ত ও নির্ভরযোগ্য জোগান না থাকায় ক্রমান্বয়ে এ খাত হয়ে পড়ছে আমদানিনির্ভর। যদি অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে শিগগির গ্যাসের সন্ধান না মেলে, তবে আরও বেশি পরিমাণ জ্বালানি পণ্য আমদানি করতে হবে। কিন্তু আমদানির ক্ষেত্রেও সরকার নানামুখী সংকটে পড়ছে। ডলারের দাম তরতর করে বেড়ে যাওয়ার কারণে অর্থনৈতিক সংকট বাড়ছে। এ ছাড়া দেশের জ্বালানি খাতে আমদানিনির্ভরতা ক্রমেই বৃদ্ধি পাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশ।বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের কাছে বর্তমানে বিভিন্ন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিশাল পরিমাণ অর্থ পাওনা রয়েছে। একই সঙ্গে সংস্থা ও কোম্পানিগুলোর ওপর প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানি ও সরবরাহের চাপ রয়েছে। তবে এলএনজি আমদানি করতে বা পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করতে প্রয়োজনীয় অর্থের ছাড় মিলছে না। ব্যাংকগুলো চাহিদা অনুযায়ী এলসি খুলছে না।