ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে আজ বুধবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ ১২টি দলকে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইদিনে দুটি নতুন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ (মার্কসবাদী) এর সঙ্গেও সংলাপে বসছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি।তবে শেষপর্যন্ত সংলাপে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নিবন্ধিত শরিক পাঁচটি দল ডাক পাবে কিনা, সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।গণঅভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় দলটির নিবন্ধন স্থগিত রেখেছে ইসি। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদসহ গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলগুলো আগে থেকেই এসব দলেরও কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। কয়েকটি দল তাদের সংলাপে না ডাকার দাবিতে ইসিতে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসি তাদের সংলাপে ডাকার বিষয়ে দ্বিধায় রয়েছে। দলগুলো অবশ্য প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকসহ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার বিষয়ক আলোচনায়ও ডাক পায়নি।এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, দলগুলো সংলাপে ডাক পাবে কিনা, সেই জানতে আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে।বর্তমানে ইসিতে নতুন দুটি দলসহ ৫৫টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে। জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের পাঁচ শরিকসহ ছয়টি দল বাদে মোট ৪৮টি দল বুধবারসহ চারদিনের সংলাপে (১৩, ১৬, ১৭ ও ১৯ নভেম্বর) ইসির আমন্ত্রণ পেয়েছে।এখনও আমন্ত্রণ না পাওয়া ১৪ দলের পাঁচ শরিক হচ্ছে- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি এবং বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন। তবে ১৪ দলের শরিক হলেও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ইসির আমন্ত্রণে গত সোমবারের সংলাপে অংশ নিয়েছে।
আজ যেসব দলের সঙ্গে সংলাপ ইসির
জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক আশাদুল হক জানান, বুধবার নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ছয়টি এবং বিকেল দুইটা থেকে চারটা পর্যন্ত আরও ছয়টি মিলিয়ে মোট ১২টি দল ইসির সংলাপে যোগ দেবে।আজ সকালের পর্বে সংলাপে আমন্ত্রিত দলগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএজেএমপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণসংহতি আন্দোলন এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)।বিকেলের পর্বে আমন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)।গত ১৩ নভেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে ইসি। সংলাপে দলগুলোর পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকার, ইসির দৃঢ়তা, আচরণবিধি প্রয়োগ এবং কালো টাকার প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন দাবি ও উদ্বেগ জানানো হয়েছে। বহুল প্রতীক্ষিত এই শেষ ধাপের সংলাপে বিএনপি ও জামায়াত ও এনসিপির অংশগ্রহণ এবং তাদের বক্তব্য কী হয়, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
