দুপুরের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির আভাসইরানে ইসরায়েলি হামলায় দুই পরমাণুবিজ্ঞানী নিহতআলোচনার কেন্দ্রে নির্বাচনের সময়ত্রাণের আশায় গিয়ে প্রাণ গেল আরও ৪০ ফিলিস্তিনিরবাংলাদেশে চীনের প্রভাববলয়ে সামঞ্জস্য আনতে কাজ করব
No icon

১২ সংসদের কোনোটির ভোট এপ্রিলে হয়নি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে তুমুল বিতর্ক। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এরই মধ্যে আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধে ভোটের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তির পাশাপাশি কেউ কেউ ওই সময়ে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।বিশ্লেষকরা বলছেন, সংসদীয় রাজনীতিতে নির্বাচনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ, সংসদে আস্থা ভোটে হেরে গেলে প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনো সময়ে নতুন করে সাধারণ নির্বাচন দিতে হয়। যদিও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ইতোমধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হয়েছে। এ ব্যবস্থায় নতুন সংসদ গঠনের পর পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে ভোট হবে। সে হিসাবে পাঁচ বছর পরপর নির্বাচনের সময় কমপক্ষে তিন মাস পিছিয়ে যাবে। এতে যে কোনো মাসেই ভোটের তারিখ পড়তে পারে। সে হিসাবে এবার ডিসেম্বরে ভোট হলে পরের সংসদ নির্বাচন হবে এপ্রিলেই। বিএনপিসহ সমমনারা নির্বাচনের দিনক্ষণ আরও এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে জামায়াত, এনসিপিসহ ইসলামপন্থি দলগুলো জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। তাদের দাবি, বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কতটুকু সক্ষম, তা আগে যাচাই করতে হবে।এপ্রিলে ভোটের নজির নেই নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর আগে অনুষ্ঠিত ১২ সংসদ নির্বাচনের কোনোটিই এপ্রিলে হয়নি। সর্বোচ্চ তিনটি নির্বাচন হয় ফেব্রুয়ারিতে; জানুয়ারি, মার্চ ও ডিসেম্বরে হয়েছে দুটি করে নির্বাচন। আর মে, জুন ও অক্টোবর হয়েছে একটি করে নির্বাচন।১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ স্বাধীন দেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৬ সালের ৭ মে।

চতুর্থ সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ।এরপর পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু হয়। পঞ্চম সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। একই বছর ১২ জুন হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এটি ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।২০০১ সালের ১ অক্টোবর হয় অষ্টম সংসদ ও ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত এটি সর্বশেষ ভোট। ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০১১ সালে সংবিধান সংশোধন করে শেখ হাসিনা তথ্য সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান চালু করেন। এই দলীয় সরকারের অধীনে পরপর তিনটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ এবং সর্বশেষ গত বছর ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদারের মতে, সংসদীয় ব্যবস্থায় নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে বিতর্ক অহেতুক। কারণ, যখনই সংসদ ভেঙে যাবে, তার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে বর্তমানে যে বিশেষ পরিস্থিতি চলছে, সেখানে সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা। নির্বাচন যখনই হোক, তার জন্য কিছু অপরিহার্য কাজ রয়েছে। সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলকে সেই কাজগুলো করতে হবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ করতে প্রার্থীদের অতিমাত্রায় জবাবদিহির আওতায় আনতে ইসির বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মত দেন তিনি।