সরকারি অফিসের সময় এক ঘণ্টা কমানো হলেও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অর্জন নেই। আজ শনিবার নতুন নিয়ম, অর্থাৎ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অফিস চালুর এক মাস পার হচ্ছে। নতুন এই নিয়মের আগে-পরে দেশের চাহিদা বিশ্নেষণ করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে আশান্বিত হওয়ার মতো চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না। বরং মিলেছে উল্টো চিত্রের তথ্য।গত ২২ আগস্ট মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৪ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে সকাল ৮টা থেকে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে অফিস শুরু হয়েছে। নতুন সময় অনুযায়ী চলছে আদালত, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। এর আগে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস চলত। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের অংশ হিসেবেই নতুন অফিস সময় চালুর যুক্তি দেখিয়েছে সরকার।বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন অফিস সময় চালুর আগে আগস্ট মাসের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত দেশে দৈনিক বিদ্যুতের গড় চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৫১.৯ মেগাওয়াট। অর্থাৎ এই চাহিদা ছিল নতুন অফিস টাইম শুরু হওয়ার আগের। অন্যদিকে, নতুন অফিস টাইম চালু হয়েছে গত ২৪ আগস্ট থেকে। চলতি মাসের অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত দেশে প্রতিদিন বিদ্যুতের গড় চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৩০৭.৫ মেগাওয়াট।
অর্থাৎ নতুন অফিস টাইম চালু হওয়ার পর পুরোনো অফিস টাইমের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা হলেও বেড়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে একজন যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকার একটি বৃহৎ সংগঠন। এখান থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেলে ভবিষ্যৎ ফলের বিষয়ে সম্ভাব্য একটি ধারণা নিয়েই করা হয়। কিন্তু অফিস টাইম পরিবর্তনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটা কতটা পরিকল্পিত ছিল তা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়েই সন্দেহ ছিল।গত ২২ আগস্ট মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন অফিস টাইমের তথ্যটি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। ওই দিনও মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, সে বিষয়ে সরকারের কোনো গবেষণা বা প্রক্ষেপণ আছে কিনা? তখন মন্ত্রিপরিষদ সচিবও তেমন কোনো ধারণা দিতে পারেননি।জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, এত অল্প সময়ে অফিস সময় পরিবর্তনের প্রভাব বোঝা কঠিন। সিদ্ধান্তটি নতুন, টানা কয়েক মাস গেলে হয়তো একটি ভালো মূল্যায়ন হতে পারে। তিনি বলেন, প্রথম দিকে নতুন কিছু মানতে গেলে মানুষ বিরক্ত হয়। ধীরে ধীরে এটা ঠিক হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, আরও কিছু সময় গেলে নতুন সিদ্ধান্তের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন করা যাবে। তবে এখনই সরকার ওই নিয়ম পাল্টানোর কথা ভাবছে না।