জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশন (ইউএনজিএ) শুরু হয়েছে নিউইয়র্কে। এতে যোগ দিতে যাচ্ছেন বিশ্বের প্রায় সব দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। এবারের ইউএনজিএতে নেপিদোর বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য দিয়ে সরব থাকবে মিয়ানমারের প্রতিবেশী আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্র্রগুলো। মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে এমন পরিকল্পনার কথা বাংলাদেশকে জানিয়েছেন আসিয়ান দূতরা।মিয়ানমার বাদে বাংলাদেশে থাকা আসিয়ান সদস্য ৯ রাষ্ট্রের দূতদের গতকাল সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কূটনৈতিক ব্রিফিং করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৈঠকে মিয়ানমার পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব ও মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম। এ ছাড়া আজ মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশে থাকা অন্য সব দেশের দূতদেরও মিয়ানমারের পরিস্থিতি তুলে ধরবে ঢাকা।
গত এক মাসে সীমান্তে মিয়ানমার যা যা করেছে তা তুলে ধরা হয়েছে আসিয়ানের কাছে। বৈঠকে বাংলাদেশের সহনশীল অবস্থানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দূতরা। বৈঠকে বাংলাদেশ তুলে ধরেছে মিয়ানমারের ভেতরে যা হচ্ছে তার সঙ্গে বাংলাদেশ কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়। কিন্তু মিয়ানমার থেকে ক্রমাগত মর্টার শেল ও গুলি এসে পড়ছে। বাংলাদেশের আকাশসীমা ক্রমাগত মিয়ানমার লঙ্ঘন করে আসছে। এগুলো একদিকে যেমন প্রাণহানি ঘটাচ্ছে, অন্যদিকে শান্তিপ্রিয় জনগণের নিরাপত্তাহীনতার কারণ হয়ে উঠছে। এতে করে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। মানুষ হারিয়ে ফেলছে তার জীবিকা অর্জনের সুযোগ এবং সর্বোপরি ভয়ে দিন অতিক্রম করছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কারণে বাংলাদেশের ক্ষতি কোনোভাবেই কাম্য নয়, কিন্তু বাংলাদেশ এর শিকার। সীমান্ত এলাকা থেকে বাংলাদেশিদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তাও জানানো হয়েছে বৈঠকে।
আসিয়ান দূতদের জানানো হয়, মিয়ানমার যা করছে তা রোহিঙ্গা সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি এবং রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরির পরিবর্তে সংকটকে আরও দীর্ঘায়িত করবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ।আসিয়ান দূতরা বৈঠকে কী জানিয়েছেন- এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, মিয়ানমার নিয়ে আসিয়ানের ৫ পয়েন্ট ঐকমত্য' রয়েছে। আসিয়ান মূলত তার বাস্তবায়ন দেখতে চায়। এটি বাস্তবায়নে মিয়ানমারকে সহযোগিতা করতে চায় তারা। তবে সেখানে আশাব্যঞ্জক কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিশেষ করে মিয়ানমারকে স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ যে পরিস্থিতি তা এ মুহূর্তে সহায়ক নয়। আগে সেখানে স্থিতিশীলতা আনতে ভূমিকা রাখা দরকার।