চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম দিনে ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান সংগ্রহ করল দক্ষিণ আফ্রিকানিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াইয়ের পথ খুললসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, বাড়তে পারে দিনের তাপমাত্রাবাংলাদেশ-ভারত গ্যাস পাইপলাইন হচ্ছে নাচাপ সামলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি
No icon

কঠিন শিলা প্রকল্পে কর ফাঁকির কঠিন ছক

পাথর উৎপাদন কাজে ব্যবহূত বিস্ম্ফোরক দ্রব্যের সংকট। এই ছুতায় টানা সাড়ে ৫ মাস বন্ধ দিনাজপুরের মধ্যপাড়া গ্র্যানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) বা কঠিন শিলা প্রকল্পের উৎপাদন। ফলে প্রতিদিন দেড় কোটি টাকা হিসাবে এরই মধ্যে সরকারের গচ্চা গেছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এর আগেও কয়েক দফা বন্ধ ছিল খনির উৎপাদন কার্যক্রম। তবে দিন-মাসের হিসাবে এবারের উৎপাদন বন্ধ থাকার সময়টা অনেক আগেই গড়েছে রেকর্ড।নতুন খবর হলো- উৎপাদনশূন্য এই কঠিন শিলা প্রকল্পে এবার ভ্যাট ও আয়কর (আইটি) ফাঁকি দেওয়ার ছক কষছে ঠিকাদারি কাজে চুক্তিবদ্ধ বেলারুশ ও দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গড়া জার্মানিয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)। বিষয়টি নিয়ে এক মাস আগে গোপনে জিটিসি, এমজিএমসিএল ও জাতীয় রাজস্ব্ব বোর্ডের মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়। এ কাজে পরামর্শক হিসেবে জিটিসি নিয়োগ করেছে রাজস্ব বোর্ডের সাবেক এক কর্মকর্তাকে। জিটিসির এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ঠিকাদারি কাজে চুক্তির ১ হাজার ২৮০ কোটি টাকার ১৩ শতাংশ হিসাবে ১৫৬ কোটি টাকার ভ্যাট ও আয়কর থেকে বঞ্চিত হবে সরকার। এমজিএমসিএলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

রাজস্ব ফাঁকির আয়োজন: পাথর উৎপাদন অব্যাহত রাখার স্বার্থে ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জিটিসির সঙ্গে ছয় বছরের জন্য দ্বিতীয় দফা চুক্তি হয়। তবে আগের চুক্তির মেয়াদ ২ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ায় নতুন চুক্তির তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর ধরা হয়। এমজিএমসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু দাউদ মুহম্মদ ফরিদুজ্জামান জানান, বর্তমান লক্ষ্যমাত্রা ৮৮ লাখ ৬০ হাজার টন পাথর। এজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাবে ১ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতি টন পাথর তোলার খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪৪৫ টাকা।নিয়ম অনুযায়ী মোট বিলের ৭ শতাংশ টাকা ভ্যাট ও ৬ শতাংশ টাকা আইটি হিসেবে সরকারের কোষাগারে জমা হওয়ার কথা। সেই হিসাবে এই চুক্তিতে সরকারের রাজস্ব পাওয়ার কথা মোট ১৫৬ কোটি টাকা। খনির পক্ষে সরকারের রাজস্ব আদায়ের বিষয়টি দেখভাল করেন এমজিএমসিএলের মহাব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) মাহবুবুল আলম।

জিটিসির ভ্যাট মুক্তির আবেদনের তথ্য নিশ্চিত করে তিনি বলেন, এটি করা হলে সরকার বড় রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে। এর আগের চুক্তিতে জিটিসি যে পরিমাণ বিল তুলেছে, তার ভ্যাট ও আয়করের টাকা নিয়ম মেনে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে। এবার তাদের একজন রাজস্ব্ব উপদেষ্টা নতুন নিয়ম উল্লেখ করে এমজিএমসিএলের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে আবেদন করেছে। সেখানে বিদেশি কোম্পানি আইনের বিভিন্ন ধারা দেখিয়ে কোম্পানিটি ভ্যাট ও ট্যাক্সের প্রায় পুরোটাই মওকুফ চেয়েছে। তাদের এই আবদার দেশের রাজস্ব আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। জিটিসি বলছে, বিদেশি কোম্পানি হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে শুধু ০.৮ শতাংশ আইটি দিতে চায় তারা। টাকার অঙ্কে যা মাত্র ১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৪৬ কোটি টাকা ভ্যাট-আইটি দিতে চাইছে না তারা। এই চিঠি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পেয়ে এমজিএমসিএলের কাছে ঠিকাদার চুক্তির কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছে। গোপনে এখন বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। মহাব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) মাহবুবুল আলম বলেন, আমি নিজেও বিষয়টিতে অবাক হয়েছি। সরকারের এত বড় ক্ষতি হোক, তা আমি চাই না।