ইউরিয়া সার উৎপাদনে দেশের কারখানাগুলো হাঁটছে সক্ষমতার পথে। গ্যাস সংকটে পড়ে সাম্প্রতিক সময়ে বন্ধ আছে দুটি কারখানা। দেশের অন্য দুটি সার কারখানা সচল থাকা, পাশাপাশি মজুত সার দিয়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করছেন খাত-সংশ্নিষ্টরা। উৎপাদন আরও বাড়াতে কারখানাগুলো সংস্কার করছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। তবে গ্যাস সংকটের গ্যাঁড়াকলে পড়ে উৎপাদন না বাড়লে আগের মতোই বেশি দামে সার আমদানি করতে হবে। গেল এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশীয় কারখানায় সার উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।জানা যায়, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গত ১ জুন থেকে সার খাতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দর ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৬ টাকা করেছে। এতে প্রতি টন সার উৎপাদনে খরচ বেড়েছে ১৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা।গত জুনে জামালপুরের যমুনা ফার্টিলাইজার কারখানায় (জেএফসিএল) ২ কোটি ৬৩ লাখ ৬১ হাজার ৬৫৪ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহূত হয়েছে। এ জন্য ৩০ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার ১০৪ টাকা অতিরিক্ত বিল গুনতে হবে। গ্যাসের দর বাড়ায় অতিরিক্ত টাকা সরকার পরিশোধ না করলে কারখানাগুলো চালু রাখা কঠিন হবে।
দেশে প্রতিবছর সাড়ে ২৬ লাখ টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে চারটি সার কারখানা থেকে প্রতিবছর ১০ লাখ টন উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি (কাফকো) থেকে ৬ লাখ টন সার মিলছে। আগামী বছরের নভেম্বরের মধ্যে ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কারখানাটি নতুন করে চালু হলে এতে আরও ৯ লাখ ২৪ হাজার টন সার উৎপাদন বাড়বে। পুরাতন সার কারখানাগুলো সংস্কার করায় ৫ থেকে ৬ লাখ টন সারের উৎপাদন বাড়বে। এতে চাহিদার পুরো ইউরিয়া সার দেশেই উৎপাদন করা যাবে।বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম এ কাদের বলেন, চাহিদার পুরো ইউরিয়া সার উৎপাদনে দেশের নিজস্ব সক্ষমতা রয়েছে। তবে আরও উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিশেষজ্ঞদের মতামত সেভাবে নিতে চান না।