আজ থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ফেরি ঘাটের ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন ছেড়ে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে মাত্র ৬ মিনিটে সড়কপথে সরাসরি ঢাকায় যাবেন। এই সকালটির জন্য বহুকাল অপেক্ষায় ছিল পদ্মার দুই পারের মানুষ। যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পদ্মা সেতু।আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতুতে শুরু হয় যান চলাচল। রাত থেকে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে ছিল গাড়ির দীর্ঘ সারি। এর আগে, গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাওয়া প্রান্তে গাড়ি চলাচলের আগে থেকেই টোল প্লাজার সামনে ছিল গাড়ির বিশাল চাপ। মাধ্যরাত থেকেই এসব গাড়ি অপেক্ষমান। পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়াও আছে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল। ট্রাক ছাড়া যাদের বেশিরভাগই এসেছেন ঘুরতে। পুরো পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে পুলিশ। টোল প্লাজা থেকে ছোটার পর মানুষের মধ্যে দেখা গেছে অন্যরকম উচ্ছ্বাস।
ওদিকে জাজিরা প্রান্তেও যানবাহনের সারিও দীর্ঘ রয়েছে। এখানেও ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি আছে পণ্যবাহী ট্রাক। এই প্রান্তে দেখা গেছে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সও।মাওয়া প্রান্তে ছয়টি কাউন্টার চলছে। অর্থাৎ ছয়টি লেন দিয়ে গাড়ি চলছে। একটি ভিআইপি কাউন্টার আছে। ছয়টি কাউন্টারই ম্যানুয়ালি চলছে। যেগুলোকে অটো করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। ওদিকে জাজিরা প্রান্তে সাতটি টোল কাউন্টার রয়েছে।আর্থিক, প্রকৌশল এবং রাজনৈতিক ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দীর্ঘতম সেতুটি উদ্বোধনের ফলে বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বাংলাদেশের।দেশের নিজস্ব অর্থের ওপর নির্ভর করে সেতু তৈরির ব্যাপারে অনেক অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের সন্দেহকে বাতিল করে সম্পূর্ণরূপে অভ্যন্তরীণ অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু অতিরিক্ত তাৎপর্য বহন করে। বেশকিছু রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক বিশ্লেষক এমনকি কিছু বিদেশি অংশীদারদেরও অনুমান ছিল যে প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, শক্তিশালী পদ্মা বিজিত হয় এবং উভয় তীরের মানুষ এখন আর অসহায় থাকবে না, কারণ তারা উভয় পাড়ের সঙ্গে সংযোগ পেয়েছে।