এটিএম বুথের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল ওরা। তবে রক্ষকেরাই অবতীর্ণ হতো ভক্ষকের ভূমিকায়। অভিনব কৌশলে হাতিয়ে নিত এটিএম বুথের টাকা। এ ক্ষেত্রে লোডিং ট্রে-তে টাকা রাখার সময় ১৯টি ১০০০ টাকার নোটের পর রাবার কিংবা কিছু একটা রেখে দিত তারা। কোনো গ্রাহক এটিএম বুথে টাকা উত্তোলনের জন্য এটিএম কার্ড প্রবেশ করিয়ে গোপন পিন নম্বর দিয়ে কমান্ড করলে ওই পরিমাণ টাকা ডেলিভারি না হয়ে পার্সবিনে জমা হতো। পরে সেই টাকা নিজেদের মতো করে সরিয়ে নিত চক্রের সদস্যরা। ক্ষতিগ্রস্ত এমন একটি বেসরকারি ব্যাংক অডিটের পর জানতে পারে পুকুরচুরির এ ঘটনাটি। র;্যাবের কাছে দ্বারস্থ হলে অভিনব কৌশলে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকটির দুই শতাধিক এটিএম বুথ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া এই চক্রের আট সদস্যকে শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন আবদুর রহমান বিশ্বাস, তারেক আজিজ, তাহমিদ উদ্দিন পাঠান ওরফে সোহান, রবিউল হাসান, হাবিবুর রহমান ওরফে ইলিয়াস, কামরুল হাসান, সুজন মিয়া ও আবদুল কাদের।
এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি চেকবই, একটি এটিএম কার্ড, চারটি আইডি কার্ড, একটি স্বর্ণের নেকলেস, এক জোড়া বালা, এক জোড়া কানের দুল, একটি আংটি ও নগদ ৯ লাখ ৪১ হাজার ৫৫৫ টাকা জব্দ করে র;্যাব।এসব তথ্য জানিয়ে গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র;্যাব মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিং করেন সংস্থাটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি বেসরকারি ব্যাংকের অডিটে এটিএম বুথের টাকার বেশ কিছু গরমিল দেখা যায়। ফলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থার্ড পার্টি আগের প্রতিষ্ঠান জি-৪ সিকিউরিটি গার্ড এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। নতুন করে গার্ডা শিল্ডের সঙ্গে চুক্তি করে। কিন্তু অনিয়ম ও অর্থের গরমিল বন্ধ হয়নি। ব্যাংক অডিটে বিষয়টি আসার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও থার্ড পার্টি সিকিউরিটি এজেন্সি গার্ডা শিল্ড র;্যাবের শরণাপন্ন হয়। র;্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। ছায়াতদন্তের একপর্যায়ে র;্যাব উদঘাটন করে যে, থার্ড পার্টি পরিবর্তিত হলেও টাকা লোডার ও অন্যান্য কারিগরি দলের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফলে র;্যাব তদন্ত অব্যাহত রাখে।