রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা গভীর অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। তাদের অনেকে পোল্যান্ড সীমান্তের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। তারা আশা করছেন, পোল্যান্ড তাদের আশ্রয় দেবে। গতকাল যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সমকাল ইউক্রেনে বসবাসরত তিনটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের মধ্যে দুজন জানিয়েছেন, তারা পরিবার নিয়ে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। তবে রাজধানীতে ভয়াবহ যানজটে পড়েছেন।ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন। এদিকে, ঢাকায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ইউক্রেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। পরে পোল্যান্ড থেকে বাংলাদেশিদের দেশে নিয়ে আসা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পোল্যান্ড সীমান্তে যাচ্ছি :দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ইউক্রেনে বসবাস করছেন আবদুল আউয়াল। রাশিয়া এভাবে আক্রমণ করবে, তা আগে কখনও বুঝতে পারেননি। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার যুদ্ধ শুরুর পর তারা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে কিয়েভ থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের উদ্দেশে রওনা দেন।আউয়াল বলেন, কিয়েভে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমার মতো আরও অনেকে এখানে প্রতিষ্ঠিত। তবে রাশিয়ার আগ্রাসন আমাদের অনিশ্চিত জীবনে ঠেলে দিয়েছে। গতকাল যুদ্ধ শুরুর পর অনেকেই কিয়েভ ছেড়ে পালিয়ে যেতে শুরু করেন। সবার চোখে উৎকণ্ঠা, সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। তবে সবচেয়ে বড় দুর্ভাবনার বিষয় পরিবারের নিরাপত্তা।
তিনি বলেন, আমরা মনে করেছিলাম, শেষ পর্যন্ত রাশিয়া আগ্রাসন থেকে বিরত থাকবে। সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো। যুদ্ধের আশঙ্কা সত্ত্বেও আমাদের মতো অনেকেই কিয়েভ বা ইউক্রেন ছাড়তে চাননি। আসলে এভাবে হুট করে চলে যাওয়া সহজও ছিল না। তার মতে, কিয়েভে শ পাঁচেক বাংলাদেশি বাস করেন। পুরো ইউক্রেনে এই সংখ্যা হয়তো হাজারখানেক হবে। তাদের বেশিরভাগই আটকা পড়েছেন। অনেকে আর্থিক সংকটে ভুগছেন। বাংলাদেশি পরিবারগুলো তাদের কিছুটা সহায়তা করেছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।আউয়ালের পৈতৃক বাড়ি ঢাকার সাভারে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে তিনি দেশে এসেছিলেন। তিনি বলেন, কঠিন এই পরিস্থিতিতে দেশে স্বজনদের কথা বারবার মনে পড়ছে। তারাও আমাদের জন্য ভীষণ উদ্বিগ্ন। আশা করি, দ্রুতই এই অনিশ্চয়তার অবসান ঘটবে এবং আমরা নিরাপদে ফিরতে পারব প্রিয় মাতৃভূমিতে। সরকার যেন আমাদের পাশে দাঁড়ায় :বৃহস্পতিবার প্রত্যুষে হামলার শব্দ শুনে কিয়েভের বাসিন্দা মারিয়া হোসেন বুঝতে পারেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। পরে তারা কিয়েভ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার স্বামী ও ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে পোল্যান্ড সীমান্তের উদ্দেশে রওনা দেন। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশি আরও একটি পরিবার রয়েছে।