রাজধানীর ধানমন্ডি ২ নম্বরে অবস্থিত ঢাকা সিটি কলেজকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যা ঢাকা কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রফিকুল ইসলাম। এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ইলিয়াসসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ৯ দফা দাবি পেশ করে ঢাকা কলেজ। এ দাবিগুলো হলো-
১. দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি শিক্ষকরাও আহত হয়েছেন।
২. আমাদের স্থাপনায় সেনাবাহিনী সরাসরি হামলা ও ভাঙচুর করেছে। যা আমাদের জন্য লজ্জানজক। এ হামলায় সংশ্লিষ্ট জড়িত প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. বিশেষ করে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা যারা এই হামলার নির্দেশ দিয়েছে তাদের পদত্যাগ করতে হবে।
৪. ইতোপূর্বে সব বিশৃঙ্খলার সঙ্গে সিটি কলেজ কতিপয় সন্ত্রাসী শিক্ষার্থীরা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এবং পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে সিটি কলেজকে স্থানান্তর করতে হবে।
৫. সিটি কলেজের যেসব শিক্ষকরা এই নিন্দনীয় ঘটনা সরাসরি নির্দেশ দিয়েছে এবং জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
৬. এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে পরিদর্শন করতে হবে।
৭. এই হামলায় জড়িত সেনা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে।
৮. বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাত শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন এবং শত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন- তাই পরিকল্পিতভাবে ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে হামলা করে বর্তমান সরকারতে ব্যর্থ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যাতে সরাসরি সিটি কলেজ এবং পুলিশ জড়িত ছিল।
৯. ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সব দাবি-দাওয়া মেনে নিয়ে ঢাকা কলেজে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, আজ দুপুর ৩টার পর ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায় ঢাকা কলেজের ছাত্ররা একটি বাস ভাঙচুর করলে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিক্রিয়া জানায়। এ নিয়ে পরে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় বলে জানা গেছে।
দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষের ফলে সায়েন্সল্যাব, মিরপুর সড়ক ও ধানমন্ডি ১ ও ২ নম্বরে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। তাদের ধাওয়ায় নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটে উভয় কলেজের শিক্ষার্থীরা।