ট্রেনে ভাড়ার ক্ষেত্রে যে রেয়াতি ব্যবস্থা চালু রয়েছে, সেটি বাতিল করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এতে করে দূরের গন্তব্যের ট্রেনের ভাড়া সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাবে। সর্বনিম্ন ভাড়া বাড়বে ১০ শতাংশ। তবে ১০০ কিলোমিটারের কম দূরত্বের ক্ষেত্রে ভাড়া অপরিবর্তনশীল থাকবে। রেয়াতি সুবিধা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এরই মধ্যে অনুমোদন পেয়েছে। যদিও এটাকে ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে বলে মানতে রাজি নয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। রেলের দাবি, শুধু একটা সুবিধা বাতিল করা হচ্ছে। নতুন করে ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে না।
রেলওয়ের রেয়াতি ব্যবস্থায়, ট্রেনের ভাড়ায় ১০০ কিলোমিটারের পরবর্তী ১৫০ কিলোমিটার ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। অর্থাৎ ১০১ থেকে ২৫০ কিলোমিটারে মেলে ২০ শতাংশ ছাড়। এরপর ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ২৫ শতাংশ এবং ৪০১ থেকে তদূর্ধ্ব কিলোমিটার পর্যন্ত ৩০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়।
এ ছাড়া অগ্রিম আবেদনের মাধ্যমে সংযুক্ত বাড়তি কোচ বা বাড়তি চাহিদার সময়ে সংযোজিত কোচের টিকিটে শোভন শ্রেণির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, স্নিগ্ধা ও অন্যান্য উচ্চশ্রেণিতে ৩০ শতাংশ রিজার্ভেশন সার্ভিস চার্জ আরোপ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, এটাকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানো হবে বানানো হচ্ছে এমনটা বলা ঠিক হবে না। এত দিন কিলোমিটারের ওপর যে ছাড় দেওয়া হতো সেই সুবিধাটা বাতিল করা হচ্ছে। এতে করে নতুন ভাড়া সমন্বয় করা হবে।
কবে নাগাদ এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর করতে। কিন্তু এর মধ্যে সবগুলো স্টেশনের ভাড়া সমন্বয় করা সম্ভব না-ও হতে পারে।
সে ক্ষেত্রে আরো কয়েক দিন পেছানো হবে। সবগুলো স্টেশনের ভাড়া সমন্বয় করা শেষে নতুন ভাড়া কার্যকর হবে। রেলের ভাড়ায় দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধা চালু হয়েছিল ১৯৯২ সালে। আর ২০১৬ সালে সর্বশেষ ভাড়া বৃদ্ধি করেছিল সরকার।
যদিও সম্প্রতি রেলভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রেলপথ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম জানিয়েছিলেন, রেল লোকসানে রয়েছে। কিভাবে লোকসান থেকে বেরিয়ে আসা যায় সেই চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। অনেক দিন ধরে ট্রেনের টিকিটের দাম বাড়ছে না। প্রয়োজনে নতুন ভাড়া সমন্বয়ের কথা হতে পারে। কিন্তু সেটাই এখনই করা হবে না। যদি ভাড়া বাড়ে তাহলে আলাপ-আলোচনা করে আপনাদের জানিয়ে ভাড়া বাড়ানো হবে।