ভারতীয় রুপির দাম আজ বৃহস্পতিবার ইতিহাসের সবচেয়ে নিচে নেমে গেছে। এ নিয়ে একটানা সাত লেনদেন অধিবেশনে রুপির দাম কমেছে। চলতি প্রান্তিকে ডলারের বিপরীতে রুপি অনেকবার দাম হারিয়েছে। বাণিজ্য–ঘাটতির পাশাপাশি পুঁজি দেশের বাইরে প্রত্যাহার হওয়ার কারণে রুপির এই দরপতন চলছে।
এদিন প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৮৫ দশমিক ২৪২৫ রুপি। রুপির ইতিহাসে এটিই সর্বনিম্ন দাম। অক্টোবরের শুরু থেকে রুপি ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ দাম হারিয়েছে। ২০২২ সালের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের পর আর্থিক বাজারে রুপি এই প্রথম এক প্রান্তিকে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স করতে যাচ্ছে বলে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেন ভারসাম্য স্থির হচ্ছে না। একই সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দাম বেড়েছে ও বন্ডের বিপরীতে অতিরিক্ত মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপি তার মূল্যমান হারাচ্ছে।
আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাংকের উপাত্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর সময়ের মধ্যে ভারতের বাণিজ্য–ঘাটতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি ভারতে বিনিয়োগ করা বিদেশি অর্থ ও ঋণ প্রত্যাহার করা হয়েছে, চলতি প্রান্তিকে যার পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন (১ হাজার ৩০ কোটি) ডলার। এর আগের প্রান্তিকে ভারতে ২০ বিলিয়ন বা ২ হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ এসেছিল।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এসব কারণে চলতি প্রান্তিকে ভারতে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। বর্তমান অর্থবছর শেষে ভারতে ২০ বিলিয়ন (২ হাজার কোটি) থেকে ৩০ বিলিয়ন (৩ হাজার কোটি) ডলারের ধনাত্মক লেনদেন ভারসাম্য হবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত অর্থবছরে ভারতে ৬০ বিলিয়ন (৬ হাজার কোটি) ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত ছিল।
বাণিজ্যে লেনদেন ভারসাম্য পরিস্থিতি ও শক্তিশালী ডলারের কারণে ভারতীয় রুপি চাপের মধ্যে থাকবে বলে আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাংক জানিয়েছে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতি ডলারের দাম ৮৬ রুপিতে দাঁড়াবে বলে ব্যাংকটি মনে করছে। অর্থাৎ ভারতীয় রুপি এ সময়ে আরও দুর্বল হবে।