দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির হালনাগদ তথ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আগে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো তথ্য দিয়েছিল যে, সদ্য বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে পণ্য রপ্তানি আয় ২ শতাংশ বেড়েছে। ওই তথ্য দিয়েই কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসাব করছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রপ্তানি আয়ের যে ডলার জমা হচ্ছিল তা ছিল ইপিবির তথ্যের চেয়ে কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে একই সময়ে রপ্তানি আয় না বেড়ে বরং কমেছে ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রপ্তানি আয়ের ডলার জমা হওয়ার হিসাবে ঘাটতি রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, রপ্তানি আয়ের হিসাব কেন্দ্রীয় ব্যাংক করে ডলার জমা হওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে। যে কারণে তাদের হিসাবটিকেই সঠিক বলে মনে করা হয়। ইপিবি হিসাব করে পণ্য রপ্তানির এক্সপোর্ট ফরমের তথ্যের ভিত্তিতে। রপ্তানি আয় বেশি দেখানোর ফলে আগে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল। অর্থাৎ দেশে ডলার খরচের চেয়ে আয় বেশি হচ্ছিল। ফলে ডলার প্রবাহ উদ্বৃত্ত ছিল। এখন রপ্তানি আয়ে ঘাটতি দেখানোর ফলে ডলারের হিসাবে আর উদ্বৃত্ত নেই বরং ঘাটতি হয়েছে। ফলে চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৭৩ কোটি ডলার।
এদিকে বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক হিসাব ও সার্বিক স্থিতিতে আগে থেকেই ঘাটতি ছিল। এখন ঘাটতি আরও বেড়ে গেছে। অর্থাৎ দেশে যে ডলার সংকট প্রকট রয়েছে সে তথ্য এখন ফুটে ওঠেছে। এ সংকটের কারণে বাজারে ডলারের দাম কমছে না। বরং ডলারের দাম আরও বেড়েছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি সপ্তাহে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করত। এখন থেকে ওই তথ্য প্রতি মাসে একবার প্রকাশ করবে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ৩০ জুনের রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। আগে বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতের রিজার্ভের স্থিতির তথ্য প্রকাশ করত। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের দেনা বাবদ ১৪২ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ ২০ বিলিয়নে নেমে এসেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে ৩০ জুনের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওখানে দেখা যাচ্ছে রিজার্ভ ২১ বিলিয়নের উপরে রয়েছে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের তথ্য প্রকাশকে আরও সংকুচিত করে ফেলল। এমনিতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তার ওপর আবার রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ আরও সংকুচিত করে ফেলল।