দেশের পোশাকশিল্পসহ অন্যান্য শিল্পকারখানায় গতকাল বেতন-বোনাস দেওয়ার শেষ দিন ছিল। গতকাল সোমবার পর্যন্ত দেশের অর্ধেক শিল্পকারখানা মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করেনি। তবে বোনাস দিয়েছে ৮১ শতাংশ শিল্পকারখানা। এই তথ্য দিয়েছে শিল্প পুলিশ। তবে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ দাবি করছে, শতভাগ কারখানায় বেতন-বোনাস দিয়েছে তারা।সারাদেশে শিল্প পুলিশের ৮টি জোনের আওতায় বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, পাটকল এবং বেপজাসহ মোট কারখানা আছে ৯ হাজার ৪৬৯টি। শিল্প পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করেনি ৪ হাজার ৮৪৯টি কারখানা, যা মোট কারখানার ৫১ দশমিক ২১ শতাংশ। বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত এক হাজার ৫৬১টি কারখানার মধ্যে বেতন দেয়নি ৯২০টি (প্রায় ৫৯ শতাংশ), বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬২৬টির মধ্যে ৪৩৫টি (প্রায় ৬৯ দশমিক ৫০ শতাংশ), বিটিএমএর সদস্যভুক্ত ৩৪৭টি কারখানার মধ্যে ১৭০টি কারখানায় বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এদিকে মোট ৯ হাজার ৪৬৯টি কারখানার মধ্যে বোনাস দিয়েছে ৭ হাজার ৭০৩টি কারখানা। অর্থাৎ ৮১ শতাংশ কারখানা বোনাস দিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত এক হাজার ৭৬৬টি কারখানায় বোনাস হয়নি।
বেতন-বোনাস না দেওয়াকে দুঃখজনক ঘটনা হিসেবে আখ্যা দেন গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা দেওয়ার পরও এতগুলো কারখানা বেতন-বোনাস পরিশোধ করেনি। প্রতিবছরই মালিকরা ঈদের আগে এমন টালবাহানা করেন।জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, মালিকদের কথা ছিল ঈদের আগেই বেতন-বোনাস পরিশোধ করবে। আমরাও বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু এখন চিত্র দেখছি ভিন্ন। তিনি বলেন, বড় কারখানাগুলো বেতন-বোনাস পরিশোধ করলেও ছোট-মাঝারি কারখানাগুলোর মধ্যে এ সমস্যা রয়েই গেছে। এটি খুবই অমানবিক। যেসব কারখানা এখনো বেতন-বোনাস দেয়নি, তাদের আগামীকালের (মঙ্গলবার) মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধ করার আহ্বান জানান তিনি।গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, শিল্প পুলিশের হিসাবের চেয়ে আরও বেশিসংখ্যক কারখানায় বেতন-বোনাস দেওয়া হয়নি। সাব-কন্ট্রাকে কাজ করা কারখানাগুলো নামিদামি ব্র্যান্ডের কাজ করলেও ঠিকমতো মজুরি-বোনাস দেয় না। এ ধরনের কারখানাগুলো নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যায়।শতভাগ পরিশোধের দাবি বিজিএমইএর : নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রায় শতভাগ কারখানায় বেতন-বোনাস পরিশোধ হয়েছে বলে দাবি করেছে বিজিএমইএর সভাপতি এসএম মান্নান কচি। তিনি বলেন, বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত মাত্র একটি কারখানায় সমস্যা ছিল, তাও সমাধান হয়েছে। ওই কারখানাও বেতন-বোনাস পরিশোধ করেছে। সবাই খুশি মনে ঈদ উদযাপন করতে পারবে।