দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সনদ পেল চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আগারগাঁওয়ের বিএসইসি ভবনের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সিএসই চেয়ারম্যানের হাতে এ সনদ তুলে দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিডিবিএল চেয়ারম্যান শেখ কবির আহমেদ ও বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ আমার অনেক দিনের ব্যক্তিগত স্বপ্ন ছিল। সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম ভাই যখন দায়িত্ব নেন, তখন তাকে আমি একটি কথাই বলেছিলাম। শুধু ইক্যুয়িটি দিয়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ ফিজিবল করা সম্ভব নয়, অন্ততপক্ষে সেবা হিসেবে হলেও আপনি সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনে কমোডিটির জন্য যান। আমি আশা করি, যিনি সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের নেতৃত্বে আছেন, তিনি উদার দৃষ্টিতে দেখলে একটি নতুন দিক উন্মোচিত হবে।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আজ আমরা প্রাইজ ডিসকভারি নিয়ে চিন্তা করছি, প্রাইজের যৌক্তিক মূল্য খুঁজছি। এ জায়গায় বড় ভূমিকা রাখতে পারবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ। বিশেষ করে আলু, চিনি ও তেল এ তিনটি দিয়ে এক্সচেঞ্জ শুরু করা যেতে পারে। প্রথমে নন ডেলিভারি, পরে ডেলিভারি।বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, গোল্ড এক্সচেঞ্জ নিয়ে ২০১৩ সালে প্যান এশিয়ার সঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একটি এমওইউ সই হয়েছিল। এর মাধ্যমে আমরা গোল্ড এক্সচেঞ্জ করতে পারি। এর সম্ভাবনা অনেক। আমি মনে করি, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোও বিনিয়োগ বহুমুখী করার সুযোগ পাবে।তিনি বলেন, বিএসইসির অধীনে স্টেকহোল্ডাররা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে পুঁজিবাজার এগিয়ে যাবে।অনুষ্ঠানে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ একটি মিসিং কম্পোনেন্ট ছিল, যেটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশে রয়েছে। যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করে, যারা এক্সপোর্ট করে, ইমপোর্টকে গুরুত্ব দেয়, তাদের জন্য এটি জরুরি। এর মাধ্যমে রাইট প্রাইস, মধ্যস্থতাকারীদের দৌরাত্ম্য কমা, আন্ডার ইনভয়েস, ওভার ইনভয়েসের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে এক্সপোর্ট-ইমপোর্টে ডিসিপ্লিন তৈরি হবে। সামনের দিনগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক সহজ হয়ে আসবে। যারা ক্রেতা, তারা পণ্যের বিশ্ববাজারে কেমন দাম, আছে তা জানতে পারবে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন কমোডিটি এক্সচেঞ্জ লাইসেন্স দেওয়ার পরপরই আমরা মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ অব ইন্ডিয়ায় এক্সপার্টদের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে অ্যাপয়েন্ট করি, যেহেতু তাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারা আমাদের যে রুলস দিয়েছে, তা আমরা জমা দিয়েছি। আমাদের সফটওয়্যার ও হার্ডওয়ার প্রকিউরমেন্টের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি, চলতি বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের যাত্রা শুরু করতে পারব।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শেখ কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাচ্চাদের খুব ভালোবাসতেন। এ জন্য তার জন্মদিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে, বাংলাদেশ হতো কি না, তা আমার সন্দেহ।