বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সুসংহত গবেষণা, অনুশীলন ও বিকাশের জন্য প্রতিষ্ঠিত জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি আজ পালন করছে তাদের গৌরবময় পথচলার ৭০ বছর। ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর যাত্রা শুরুর পর থেকে একাডেমি ভাষা সংগ্রামের চেতনা, দেশজ কৃষ্টি ও সমকালীন সৃজনধারাকে ভিত্তি করে বাঙালির মননচর্চার প্রধান অঙ্গন হয়ে ওঠে।প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার বাংলা একাডেমি আয়োজন করেছে দিনব্যাপী কর্মসূচি। সকাল সাড়ে ৯টায় একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও বাংলা একাডেমির পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দিনের আনুষ্ঠানিকতা।সকাল ১০টায় ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও শিক্ষাবিদ ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে একাডেমির প্রতিনিধি দল।বিকেল সাড়ে ৩টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা।এতে স্বাগত ভাষণ দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য দেবেন সাহিত্যিক ও গবেষক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের উত্তাল দিনের পরপরই বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় একটি নিবেদিত গবেষণা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের দাবি ওঠে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন বর্ধমান হাউসে ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলা একাডেমি, যা পরবর্তী সময়ে হয়ে ওঠে জাতির সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়ের অন্যতম প্রধান ঠিকানা।একাডেমির আদর্শ ও লক্ষ্য জাতীয় চেতনার সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত। দেশজ সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, সমকালীন শিল্প-সাহিত্য এসবের সংরক্ষণ, গবেষণা ও বিকাশের মাধ্যমে জাতির মানসিক উৎকর্ষ সাধনেই কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি নিরলসভাবে।৭০ বছরের পথপরিক্রমায় বাংলা একাডেমি আজ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণা, প্রকাশনা, শব্দকোষ নির্মাণ, লোকসংস্কৃতি সংগ্রহ, পাঠচর্চা ও জাতীয় সাহিত্যোৎসব আয়োজনের সর্বাধুনিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে, যা বাঙালির সাংস্কৃতিক বিকাশের ধারাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এগিয়ে নিতে অবিচল ভূমিকা রেখেছে।