আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘকে (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। একই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান তারা।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের টাইগার পাস মোড়ে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ঘিরে সংঘর্ষে নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা শেষে আয়োজিত শোক এবং সম্প্রীতি সমাবেশে তারা এ সব দাবি করেন।
এ সময় টাইগার পাস চত্বরে উপস্থিত ছাত্র-জনতাকে ‘ইসকন জঙ্গি, স্বৈরাচারের সঙ্গী’সহ নানা ধরনের স্লোগান দিতে দেখা গেছে। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা ভুলে যাইনি আওয়ামী লীগের সহায়তায় ইসকন কীভাবে গত ১৬ বছর বেড়ে উঠে আজকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে স্বৈরাচারের সঙ্গী হয়ে ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই ভারতের বুবু, ভারতের হাসিনা এই বাংলাদেশে তোমার আর ঠাঁই হবে না। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হয়, বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষ সেই ষড়যন্ত্র রুখে দেবে।
তিনি বলেন, দেশে সব ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। যে হিন্দু সে হিন্দু ধর্ম পালন করবে, যে বৌদ্ধ সে বৌদ্ধ ধর্ম পালন করবে, যে খ্রিষ্টান সে খ্রিষ্টান ধর্ম পালন করবে। আমরা সবার অধিকার রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করবে, সেসব উগ্রবাদী সংগঠনকে বাংলাদেশে কোনো জায়গা দেওয়া হবে না।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, জঙ্গি সংগঠন ইসকনকে বিতাড়িত করা হাতের ময়লা। যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা এই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ এসেছে, সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এই চিন্ময়রা উসকানি দেয়।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে সব প্রেতাত্মাদের বলে দিতে চাই, আমরা ১৬ বছরের খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছি, ছোটোখাটো কিছু জঙ্গি ইসকনকে দেশছাড়া করা আমাদের জন্য হাতের ময়লা।
তিনি বলেন, আমরা সব ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সহানুভূতিকে দুর্বলতা মনে করে, আমরা কি তাদের ছেড়ে দেব? আমরা কি এই জঙ্গি ইসকনকে ছেড়ে দেব। আমরা আমাদের সাইফুল ভাইয়ের খুনিদের বিচার দেখতে চাই। এই বীর চট্টলায় খুনি ইসকনের জায়গা হবে না। আপনাদের বলে দিতে চাই, আমাদের চারপাশে অনেক চক্রান্ত ছিল, আরও চক্রান্ত হবে, কিন্তু আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সব চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, প্রশাসনের যেসব জায়গায় স্বৈরাচারের দোসররা বিরাজমান, তাদের সমূলে নির্মূল করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। দাদাবাবুদের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। ভারতীয় কোনো আগ্রাসন বাংলাদেশে চলবে না। ভারতীয় কোনো দাদাগিরি বাংলাদেশে চলবে না।
চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, আমাদের এই বাংলাদেশে কোনো উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সংগঠনের ঠাঁই হবে না, কেউ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। এই বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা ১৫ দিনের মধ্যে ইসকনকে নিষিদ্ধকরণ চাই। ইসকনের সন্ত্রাসীরা গতকাল আমাদের ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচাই চাই। পুলিশ প্রশাসনকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে।