সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়ার পর, ভারত পরীক্ষাতেও পাশ করতে পারেনি টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে ৫০ রানে হেরে সেমিফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের। টস জিতে নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, এ উইকেটে ১৫০-১৬০ রানের স্কোর ভালো। কিন্তু অ্যান্টিগায় ভারতের দেয়া ১৯৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ থেমেছে ৮ উইকেটে ১৪৬ রানে। এতে ভারত পায় ৫০ রানের জয়।বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালো শুরু করে তানজিদ ও লিটন । দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন। ১০ বলে ১৩ রান করে ক্যাচ আউট হন এই টাইগার ওপেনার। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তানজিদ হাসান তামিম মিলে এগোতে থাকেন। পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে লিটনের উইকেট হারিয়ে ৪২ রান তোলে বাংলাদেশ।শুরুতে দারুণ কিছু শটে আশা দেখালেও পরে ধীর হয়ে গেছেন তানজিদ। ৩১ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন দলের ৬৬ রানের মাথায়। শান্ত লড়াই চালিয়ে গেছেন। দারুণ কিছু শটও খেলেছেন। তবে আরেক প্রান্তে কেউ খুব বেশি টিকতে পারছিলেন না। ৬ বলে ৪ রান করে বিদায় নেন তাওহিদ হৃদয়। সাকিব আল হাসান খেলেন ৭ বলে ১১ রানের ইনিংস। তার বিদায়ে ৯৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান শান্ত ও জাকের। ৩২ বলে ৪০ রান করে সাজঘরে ফিরে যান শান্ত। তাসকিনের বদলে একাদশে সুযোগ পাওয়া জাকের ৪ বলে মাত্র ১ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। এই দুই ব্যাটারের বিদায়ে ১১০ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।এরপর জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও রিশাদ হোসেন। ক্রিজে নেমেই ভারতীয় বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালান রিশাদ। তিন ছক্কা ও ১ চারে মাত্র ১০ বলে ২৪ রান করে জাসপ্রিত বুমরাহর শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ভাঙে ২৮ রানের জুটি। এতে বড় লক্ষ্যে নেমে বাংলাদেশ থামে ৮ উইকেটে ১৪৬ রানে। ভারতের পক্ষে বুমরাহ দুর্দান্ত বোলিং করেন। ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। কুলদীপ ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট পান।এর আগে অ্যান্টিগায় টস জিতে বোলিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। কারণ বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর মনে হয়েছে, এই উইকেটে ১৫০-১৬০ রান হবে ভালো লড়াই করার মত স্কোর। কিন্তু আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৯৬ রান তুলেছে ভারত।
ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে আগ্রাসী ছিলেন দুই ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। দুজনের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৩৯ রান। ১১ বলে ২৩ রান করা রোহিতকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব আল হাসান। রোহিতের এই উইকেটটি নিয়েই প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৫০ উইকেট পূর্ণ করেন সাকিব।আরেক ওপেনার বিরাট কোহলিও চড়াও হন পাওয়ার প্লেতে। জমে ওঠা এই ব্যাটারের প্রতিরোধ ভাঙেন তানজিম সাকিব। ওই ওভারেই জোড়া উইকেট তুলে নেন তিনি। তানজিমের স্লোয়ার ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে মারার চেষ্টায় বোল্ড হন কোহলি। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৮ বলে ৩৭ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। এরপর উইকেটে আসা সূর্যকুমার যাদব এক ছক্কায় শুরু করেন ইনিংস। পরের বলেই তাকে মাঠছাড়া করেন তানজিম।সূর্যকুমারের বিদায়ের পরই ভারতের রানের লাগাম কিছুটা টেনে ধরতে পেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পন্তের ঝোড়ো ব্যাটিং ভারতকে রাাখে বড় সংগ্রহের পথে। ২৪ বল থেকে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে এ বাঁহাতি রিশাদ হোসেনকে উইকেট দিয়ে ফেরেন। শিভম দুবে ২৪ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলে রিশাদের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হন। টাইগার লেগ স্পিনার ৩ ওভারে খরচ করেন ৪৩ রান।পান্ডিয়া তিন ছক্কা, চার চারে ভারতকে নিয়ে যান বড় সংগ্রহে।বাংলাদেশের সেরা বোলার আজ তানজিম সাকিব। ২ উইকেট নিতে তিনি দেন ৩২ রান। দুই অফ স্পিনার মাহমুদউল্লাহ ও মাহেদীর ৬ ওভারে এসেছে ৩৬ রান। কিন্তু মুস্তাফিজ ছিলেন বেশ খরুচে, ৪ ওভারে দেন ৪৮ রান। ৩ ওভারে ৩৭ রানে ১ উইকেট সাকিবের।