খেলা শুরু সকাল ১০টায়, এমন সময় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ব্যাটিং করতে চাইবেন কে? বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে দুই দলের কেউই তা চাননি। কিন্তু টস হারায় আগে ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জটা বাংলাদেশকেই নিতে হয়। এরপর যা হওয়ার তা–ই হলো। ব্যাটিংয়ে নেমেই টপ অর্ডারে ধস। মাহমুদউল্লাহর অর্ধশতক ও শেষের দিকে জাকের আলীর ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত কোনোরকমে ৬ উইকেটে ১৫৭ রান করল বাংলাদেশ।
সে রান ব্রায়ান বেনেট ও সিকান্দার রাজার অর্ধশতকে সহজেই টপকে গেছে জিম্বাবুয়ে। ৯ বল বাকি রেখে ৮ উইকেটের একমাত্র সান্ত্বনার জয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজ শেষ করল সফরকারীরা। রান তাড়ার জন্য আদর্শ কন্ডিশনটাই পান জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। সকালের কন্ডিশনের চ্যালেঞ্জ তখন আর নেই। সেটি কাজে লাগিয়ে তাদিওয়ানাশে মারুমানি ও বেনেট মিলে জিম্বাবুয়েকে এনে দেন সফরের সেরা ওপেনিং জুটি। দুজন মিল বেশ দ্রুত ৩৮ রান তুলে ফেলেন। দুজন না বলে অবশ্য একজনই বলা শ্রেয়, কারণ ৩৮ রানের জুটিতে মারুমানির অবদান ছিল ৭ বলে ১ রান, বাকিটা বেনেটের।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে সাকিবের বলে মারুমানি স্টাম্পিং হলেও অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে নিয়ে প্রয়োজনীয় রানরেটের সঙ্গে পাল্লা দেন বেনেট। ৩৬ বলে অর্ধশত পূর্ণ করার পর ৪৯ বলে ৭০ রান করে থামেন। ছোট ক্যারিয়ারের এটি তাঁর প্রথম ফিফটি, যাতে ছিল ৫টি করে চার ও ছক্কা। বাকি কাজটা করেছেন অধিনায়ক রাজা, ৪১ বলে অর্ধশতক করার পর বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে স্ট্রাইক রেট বাড়িয়ে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪৬ বলে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৫৬ স্ট্রাইক রেটে ৭২ রানে অপরাজিত ছিলেন রাজা।তাঁর ইনিংসের সৌজন্যে ১৮.৩ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় জিম্বাবুয়ে।
এর আগে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের শুরুতে সেই পুরোনো হতাশার ছবিই। আগের ম্যাচে ইনিংস উদ্বোধনে নেমে শতরানের জুটি গড়লেও দুই বাঁহাতি সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান আজ ৯ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি। তাঁদের সামনে পাওয়ারপ্লেতেই বোলিং করেন দুই অফ স্পিনার রাজা ও বেনেট, সঙ্গে ছিলেন ব্লেসিং মুজারাবানি। সাফল্যও এসেছে তাতে। দ্বিতীয় ওভারেই মুজারাবানির বলে আউট তানজিদ (২)। পরের ওভারে বেনেটের বলে ফেরেন ৭ রান করা সৌম্যও।
জিম্বাবুয়ের অফ স্পিন সামলাতে তিনে পাঠানো হয় ডানহাতি তাওহিদ হৃদয়কে। কিন্তু হৃদয় আগের ম্যাচের মতো আজও বেনেটের বলে ১ রান করে আউট হয়েছেন। ১৫ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশকে খাদের কিনার থেকে টেনে তোলেন নাজমুল হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ। দুজন মিলে ৪৫ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়েন। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ১২৮ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে রানখরা কাটিয়ে ছন্দে ফেরার আভাস দেন নাজমুল। অবশ্য ইনিংসের ১৪তম ওভারে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে থামতে হয় তাঁকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক অর্ধশতকের সুযোগ হাতছাড়া করলেও মাহমুদউল্লাহ করেননি। ১৮তম ওভার পর্যন্ত টিকে থেকে ৩৬ বলে ১৩৮ স্ট্রাইক রেটে অর্ধশতক করেন, ৬টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে। মাইলফলকের পর অবশ্য রানের গতি কমে যায় মাহমুদউল্লাহর। মুজারাবানির বলে আউট হন ৪৪ বলে ৫৪ রান করে, স্ট্রাইক রেট ছিল ১২২। সাকিবও দ্রুত রান তুলতে পারেননি। ১৭ বলে ২১ রান করেন তিনি। বাংলাদেশকে এরপর একটু টানেন জাকের আলী। শেষ ২ ওভারে ২টি ছক্কা ও ১টি চারে ১১ বলে ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। তাঁর ইনিংসের সৌজন্যে বাংলাদেশের রানটা দেড় শ ছাড়ায়। তবে জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি তা।