ম্যাচের শেষ বল দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারিতে পাঠালেন ইব্রাহিম জাদরান। তবে মাঠ ছাড়তে হলো তাকে একরাশ হতাশা সঙ্গী করে। রান তাড়ায় প্রায় একার লড়াইয়ে দারুণ এক জয়ের আশা জাগিয়েও অল্পের জন্য পারলেন না এই ওপেনার। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর মাথিশা পাথিরানার দারুণ বোলিংয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা।রানগিরি ডাম্বুলা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ছেলেদের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচের উপলক্ষ রোমাঞ্চকর এক জয়ে রাঙাল স্বাগতিকরা। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আফগানিস্তানের বিপক্ষে লঙ্কানরা জিতল ৪ রানে।চাপের মুখে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৩২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক হাসারাঙ্গা। শ্রীলঙ্কা করে ১৬০ রান। জবাবে আফগানিস্তান ১৫৬ পর্যন্ত যেতে পারে ৯ উইকেট হারিয়ে।৩ উইকেট হাতে রেখে শেষ ১২ বলে আফগানদের দরকার ছিল ১৪ রান। ১৯তম ওভারে ৩ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন পাথিরানা। সব মিলিয়ে ২৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা তিনিই। কাজে আসেনি ইব্রাহিমের ৫৫ বলে ৮ চারে গড়া অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস। আফগানিস্তানের আর কেউ ২০ রান ছাড়াতে পারেননি। ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরুটাও ভালো হলো শ্রীলঙ্কার।
লক্ষ্য তাড়ায় একটি করে ছক্কা ও চার মেরেই বিদায় নেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তার উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে আফগানিস্তান তোলে ৫৭ রান। দ্বিতীয় উইকেটে গুলবাদিন নাইবের সঙ্গে ৩০ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়েন ইব্রাহিম। নাইবকে বোল্ড করে ওই জুটি ভাঙেন হাসারাঙ্গা। এরপর দ্রুত আরও তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আফগানিস্তান।আজমাতউল্লাহ ওমারজাইকে ফিরিয়ে প্রথম শিকার ধরেন পাথিরানা। দাসুন শানাকা একই ওভারে বিদায় করেন মোহাম্মদ নাবি ও নাজিবউল্লাহ জাদরানকে। তিন জনের কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। ইব্রাহিম ফিফটি করেন ৩৯ বলে। কারিম জানাতের সঙ্গে জুটিতে দলকে লড়াইয়ে রাখেন তিনি। প্রথম স্পেলে দারুণ বোলিং করা পাথিরানা দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন জানাতকে (২০ বলে ১৬)। কাইস আহমেদের দ্রুত বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে গিয়ে দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারেন নুর আহমাদ। ১৯তম ওভারে দারুণ দুটি ডেলিভারিতে নুর ও নাভিন উল হাককে বোল্ড করে দেন পাথিরানা। ম্যাচ হেলে যায় শ্রীলঙ্কার দিকে।শেষ ওভারে ১১ রানের সমীকরণে হাসারাঙ্গা বল তুলে দেন বিনুরা ফার্নান্দোর হাতে, নিজের প্রথম তিন ওভারে যিনি দিয়েছিলেন ৩৮ রান। তবে স্নায়ুর চাপ সামলে শেষ ওভারে দারুণ বোলিং করেন এই পেসার। বিনুরার প্রথম চার বলের দুটিতে রান নেওয়ার সুযোগ থাকলেও নেননি ইব্রাহিম। অন্য দুটিতে ব্যাটই ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। পঞ্চম বলে আউট হতে পারতেন ইব্রাহিম। ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ নিতে পারেননি শানাকা। শেষ বলে বাউন্ডারিতে সফরকারীদের পরাজয়ের ব্যবধানই কমে শুধু।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে পাথুম নিসাঙ্কাকে হারায় শ্রীলঙ্কা। ওয়ানডে সিরিজে একটি ডাবল সেঞ্চুরি ও একটি সেঞ্চুরি করা ওপেনার এবার থামেন ৬ রান করে। আরেক ওপেনার কুসাল মেন্ডিসও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। দুজনই বাঁহাতি পেসার ফাজালহাক ফারুকির শিকার।ভালো শুরু করে ইনিংস বড় করতে পারেননি ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। ১৭ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ২৪ রান করেন তিনি। চারিথ আসালাঙ্কা দ্রুতই ফিরলে অষ্টম ওভারে শ্রীলঙ্কার স্কোর হয়ে যায় ৪ উইকেটে ৫৫। হাসারাঙ্গা উইকেটে যান এরপরই। দ্বিতীয় বলে চার মেরে প্রথম রানের দেখা পান তিনি। পরের বলে বাউন্ডারি মারেন আরেকটি। চতুর্দশ ওভারে কাইসের টানা চার বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় স্রেফ ২৪ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন হাসারাঙ্গা। এই সংস্মরণে তার দ্বিতীয় ফিফটি এটি।