লংমার্চে ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিহত করার ঘোষণাবিজয় দিবসে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ পেলেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তাউত্তরে ঘন কুয়াশা, জেঁকে বসছে শীতজুলাই বিপ্লবের কন্যারা ইতিহাস পরিবর্তনের ‘নায়িকা’: ড. ইউনূস
No icon

লংমার্চে ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিহত করার ঘোষণা

বাংলাদেশের জনগণ অন্য কোনো দেশের প্রভুত্ব মেনে নেবে না। এ দেশ নিয়ে কেউ ষড়যন্ত্র করলে জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করবে। ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিএনপির তিন সংগঠনের লংমার্চে এসব কথা বলেন নেতারা। ভারতের আগ্রাসন যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।গতকাল বুধবার যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল ঢাকা-আখাউড়া লংমার্চ করে। সকাল ৯টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে হাজারো নেতাকর্মী প্রাইভেটকার, ট্রাক, পিকআপ নিয়ে আগরতলা অভিমুখে রওনা দেন। রাস্তায় রাস্তায় তাদের সঙ্গে যোগ দেন অনেকে। হবিগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে তিন সংগঠনের নেতাকর্মীরা গাড়ি ও মোটরসাইকেল নিয়ে অংশ নেন। হাতে হাতে ছিল জাতীয় ও দলীয় পতাকা এবং ফেস্টুন। ভারতের সীমান্ত লাগোয়া আখাউড়া স্থলবন্দরের ট্রাকস্ট্যান্ডে বিকেলে সর্বশেষ সমাবেশ হয়েছে।লংমার্চ সফল করতে সকাল ৭টা থেকেই রাজধানীতে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন নেতাকর্মীরা। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। উদ্বোধনী বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি। এই স্বাধীনতা আমরা বিক্রি করে দেব? আমরা পিন্ডির কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। দিল্লির কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করব? আজ ভারতের শাসকগোষ্ঠী পুরো পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশগুলোর কাছে সমালোচিত। ভারত গণতান্ত্রিক দেশ হলেও বাংলাদেশের মানুষের আত্মশক্তি ও বীরত্ব তারা বুঝতে পারেনি।

লংমার্চ ফকিরাপুল-সাইনবোর্ড-চিটাগং রোড হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় ভৈরব পৌঁছায়। ঢাকা থেকে লংমার্চ শুরু হলে আখাউড়া রুটের বিভিন্ন পয়েন্টে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী সড়কের পাশে জড়ো হন। তারা গাড়িবহরে থাকা নেতাকর্মীর হাত নেড়ে, ফুল ছিটিয়ে স্বাগত জানান। তারা দিল্লি, না ঢাকা ঢাকা ঢাকা , ভারতের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান সহ নানা স্লোগান দেন। ভৈরবে সংক্ষিপ্ত পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এসএম জিলানী। তিনি বলেন, ভারত নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাবি করে। কিন্তু গণআন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের আশ্রয় দিয়েছে। আপনাদের (ভারত) জানিয়ে দিতে চাই, এ দেশের এক ইঞ্চি মাটির দিকে তাকালে সেই চোখ উপড়ে ফেলা হবে। সভায় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ভারতের আশীর্বাদে এ দেশে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এখন তারা এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।ভৈরব থেকে রওনা হয়ে বিকেল সাড়ে ৩টায় আখাউড়ায় গাড়িবহর পৌঁছায়। স্থলবন্দর মাঠে সমাপনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না বলেন, বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত স্বাধীনচেতা। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নিয়ে আমরা সজাগ। আমাদের কোনো প্রভু নেই, আমরা ভারতকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে দেখি। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনুন। ভারতকে বলুন শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের ফিরিয়ে দিতে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান বলেন, প্রয়োজনে দেশের সম্মান রক্ষায় আবারও রক্ত দেব। দিল্লির দাসত্ব মানবে না এ দেশের জনগণ। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম ও খুন করেছে। যতই ষড়যন্ত্র হোক, তা সফল হবে না।এই কর্মসূচি ঘিরে ঢাকা-আখাউড়া রুটে বিভিন্ন এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। লংমার্চে অংশ নেন যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করিম পল, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তারেক, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শ্যামল মালুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান, দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।