মেক্সিকোতে ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসে নিহত ৪৪, নিখোঁজ ২৭সোমবার থেকে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণাসেনা কর্মকর্তাদের বিচার ইস্যুতে নানা আলোচনা, প্রশ্নঢাকায় বৃষ্টির আভাস নেই, যেমন থাকবে তাপমাত্রাশেষ পর্যন্ত এনসিপি ইতিবাচক অবস্থানে আসবে, আশা সিইসির
No icon

হেফাজতে ১৫ সেনা কর্মকর্তা

গুম ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়ানোর অভিযোগে সেনাবাহিনীর যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১৫ জনকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে তাঁদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি গতকাল শনিবার পর্যন্ত হাতে পায়নি সেনা সদর। গতকাল বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মামলাসংক্রান্ত বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান এ তথ্য জানান।বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংবিধানস্বীকৃত দেশের সব আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এ কথা জানিয়ে মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে সেনা হেফাজতে রয়েছেন।আমরা মোট ১৬ জনকে সেনা হেফাজতে আসার জন্য বলেছিলাম, তাঁদের মধ্যে ১৫ জন এসে হেফাজতে রয়েছেন।

তিনি জানান, তিনটি মামলায় ২৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে অবসরে ৯ জন, এলপিআরে একজন আর কর্মরত আছেন ১৫ জন।তিনি বলেন, মেজর জেনারেল কবির আত্মগোপনে গেছেন।তিনি যাতে বিদেশে চলে যেতে না পারেন, সে জন্য তৎপরতা অব্যাহত রাখা হয়েছে।মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, গত ৮ অক্টোবর আইসিটিতে প্রথম দুটি চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর তৃতীয় আরেকটি চার্জশিট জমা পড়ে। এই সংবাদটি আসা শুরু করেছে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে।আমরা টিভি স্ক্রলের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, চার্জশিট জমা পড়েছে এবং ট্রাইব্যুনালে গ্রহণ করা হয়েছে। চার্জশিটগুলোর মধ্যে একটি ছিল গুমসংক্রান্ত যাঁরা তখন ডিজিএফআইয়ে কর্মরত ছিলেন তাঁদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আরেকটি ছিল র;্যাবের টিএফআই নিয়ে। আরো একটি অভিযোগ ছিল ৪-৫ আগস্টের রামপুরার ঘটনা নিয়ে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়ে গেল।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর তা নিয়ম অনুযায়ী আইজিপির কাছে চলে যায় এবং এ ক্ষেত্রে ২২ তারিখ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো চার্জশিটের কপি কিংবা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাইনি। চার্জশিটে প্রায় ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার নাম এসেছে। এর মধ্যে অবসরে আছে ৯ জন, এলপিআরে আছেন একজন ও কর্মরত আছেন ১৫ জন কর্মকর্তা। যাঁরা অবসরে চলে গেছেন তাঁদের প্রতি আমাদের সেনা আইন ওভাবে খাটে না।তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সংবিধানস্বীকৃত বাংলাদেশের সব আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ তারিখে কর্মরত ১৫ ও এলপিআরে থাকা একজন সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে আসার জন্য একটি আদেশ সংযুক্তি করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আদেশে তাঁদের বলা হয়েছে, ৯ তারিখে তাঁরা যেন ঢাকা সেনানিবাসে সেনা হেফাজতে চলে আসেন। আমরা কিন্তু এখনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাইনি বা পুলিশও আমাদের কিছু জানায়নি। এর পরও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসব কর্মকর্তাকে হেফাজতে আসার জন্য আদেশ দিয়ে দেয়।

মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, আমরা যাঁদের হেফাজতে আসতে বলেছি তাঁদের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই রেসপন্স করেছেন। ওই একজন কর্মকর্তা ৯ তারিখ পর্যন্ত কোনো রেসপন্স করেননি। পরে ১০ তারিখে আমরা তাঁর সঙ্গে আবার যোগাযোগের চেষ্টা করি এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করি। আমরা জানতে পারি, উনি ৯ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন একজন আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে। কিন্তু পরে আর বাসায় ফেরত আসেননি। এরপর তাঁর সঙ্গে এবং তাঁর পরিবারেরও মোবাইল ফোনে কোনো যোগাযোগ স্থাপন হয়নি। তিনি হলেন মেজর জেনারেল কবির।সিটিআইবি ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক কবীর আহাম্মদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে ইলিগ্যাল অ্যাবসেন্ট হিসেবে ঘোষণা করি। এরপর গত ১০ অক্টোবর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আরো কিছু অফিশিয়াল কাজ সম্পন্ন করি। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ডিজিএফআই, এনএসআই ও বিজিবিকে বলেছি, তোমরা যে যেখানে আছ স্থলবন্দর, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে যেন উনি অবৈধভাবে দেশের বাইরে না যেতে পারেন। উনার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায়ও আমরা লোক পাঠিয়েছি। উনি দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন এ বিষয়টি মাথায় রেখেও আমরা খোঁজ নিয়েছি। উনি যাতে দেশের বাইরে না যেতে পারেন, সে জন্য আমি নিজে ডিজি ডিজিএফআই, ডিজি এনএসআই ও ডিজি বিজিবির সঙ্গে কথা বলেছি।