বিডিআর বিদ্রোহের বিচারকাজ শুরু আজরাতে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভঅন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টাসাভারে যাত্রীবাহী বাসে অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় আগুন, পুড়ে নিহত একই পরিবারের চারজনলন্ডনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু
No icon

সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পর পদত্যাগ করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। শিগগিরই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। এই কমিশনের অধীনে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। তবে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ।নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ" এর মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে। সবার মতামতের ভিত্তিতে এই সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।বিশেষজ্ঞদের মতে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো নির্বাচন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে।এই সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হলো নির্বাচনী আইন সংস্কার, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা সংস্কার, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন সংস্কার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, জনপ্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে দলীয়করণমুক্ত করা, নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং প্রার্থীদের তথ্য ফরম তথা হলফনামা ফরমে পরিবর্তন আনা।

এর মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার পক্ষ থেকে এসংক্রান্ত সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সংস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকেও সংস্কার করব।কমিশনকে যেকোনো সময় আদর্শ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রাখব। তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা হবে এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করা হবে।এদিকে পদত্যাগের ঘোষণাকালে সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায়, শুধু কমিশনের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ, কালো টাকা ও পেশিশক্তিবিবর্জিত এবং প্রশাসন-পুলিশের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না। নির্বাচন পদ্ধতিতে মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন হবে।রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আচরণে এবং বিশেষত প্রার্থীদের আচরণে পরিবর্তন করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, নির্বাচনের প্রতিটি ধাপই সঠিক হওয়া প্রয়োজন। আর প্রতিটি নির্বাচনী ধাপের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে কিছু সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের ওপর। এ ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমসুযোগ সৃষ্টি করতে পারে এমন একটি আইনি কাঠামো থাকতে হবে। ভোটার তালিকা প্রণয়নে যোগ্য সবার ভোটার হওয়া নিশ্চিত করতে হবে।আগ্রহীদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ও ভোটারদের সামনে বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প প্রার্থী থাকতে হবে এবং ভোটারদের ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে স্বাধীনভাবে ভোটদানের সুযোগ দিতে হবে।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এসব মানদণ্ড পূরণে সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (আরপিও)-তে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়। ড. এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল এবং অন্যান্য অংশীজনের মতামত নিয়ে একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়ন করে। যে কমিশনের সদস্য ছিলেন বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা ব্রিগেড়িয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।