নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াইয়ের পথ খুললসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, বাড়তে পারে দিনের তাপমাত্রাবাংলাদেশ-ভারত গ্যাস পাইপলাইন হচ্ছে নাচাপ সামলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি৩৬৯ দিন পর মাঠে ফিরলেন নেইমার
No icon

বিতর্ক সমালোচনা নিয়েই সংসদে পাস ইসি আইন

ভেতরে-বাইরে ব্যাপক বিতর্কের মধ্যেই জাতীয় সংসদে পাস হলো বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের বিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদে বিলের ওপর আনা বিরোধীদলীয় সদস্যদের কিছু সংশোধনী গ্রহণ করা হলেও মৌলিক কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে এই আইন পাসের ফলে দীর্ঘদিন পরে ইসি গঠনের পদ্ধতি সাংবিধানিক পূর্ণতা পেল।গতকাল বিল পাসের সময় আইনমন্ত্রী যে সংশোধনীগুলো গ্রহণ করেছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ছয় সদস্যের অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটিতে রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুই বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন নারী সদস্য থাকবেন। বিষয়টি আইনে সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিলে অনুসন্ধান কমিটিকে ১০ কার্যদিবস সময় দেওয়া ছিল; সেটা বাড়িয়ে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে। বিলের শিরোনামে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। সংসদে সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে এখন নাম হবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল। উত্থাপনের সময় বিলের নাম ছিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল।এ ধরনের আরও অনেকগুলো সংশোধনী প্রস্তাব আনেন বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও গণফোরামের ১২ জন সংসদ সদস্য। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ২২টি গ্রহণ করেন আইনমন্ত্রী। এগুলোর বেশিরভাগই শব্দগত পরিবর্তন। রাজনৈতিক অঙ্গন ও নাগরিক সমাজে আলোচিত বিষয় নিয়ে ওঠা সংশোধনী প্রস্তাবগুলো তিনি গ্রহণ করেননি।বিলটি এখন রাষ্ট্রপতির সইয়ের পর গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। আসছে ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হলে এই আইনের অধীনে তা গঠনের সুযোগ তৈরি হবে।এর আগে গতকাল সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

জাতীয় পার্টি, বিএনপি, জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্যরা বিলের ওপর জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব দিয়ে আলোচনায় অংশ নেন।১৭ জানুয়ারি মন্ত্রিসভায় প্রথম এই আইনের খসড়ায় নীতিগত চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে গত রোববার বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী। ওই দিনই বিলটি পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বুধবার দুটি পরিবর্তনের সুপারিশসহ প্রতিবেদন সংসদে তোলেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার।পরে আলোচনায় অংশ নিয়ে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সার্চ কমিটিতে রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন নারী সদস্য রাখার প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া তিনি সার্চ কমিটির সুপারিশ করা ১০ জনের নামের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশের বিধান যুক্ত করার কথা বলেন। তার প্রথম প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হলেও দ্বিতীয়টি করা হয়নি। পাশাপাশি একাধিক সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে সার্চ কমিটিতে সংসদের প্রতিনিধিত্ব রাখার দাবি তুললেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।বিএনপির হারুনুর রশীদ একটি নির্বাচন কমিশন আইন গঠনের দাবি জানান। তিনি বলেন, এই আইনের মাধ্যমে আগামীতে দিনের বেলা নতুন কৌশলে নির্বাচন করবে কিনা, তা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন আছে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।আইনে না থাকলেও প্রধানমন্ত্রীই সব করবেন বলে উল্লেখ করেন জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়েই কাজ করতে হবে। আইনে না থাকলেও সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০ জনের নাম যাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি পাঁচজন নির্বাচন করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন।গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে তার দল যে প্রস্তাব দিয়েছে, তার প্রতিফলন এই আইনে নেই।আমাকে পানি খাইয়ে দিয়েছেন :বিলটি পাসের বিভিন্ন পর্যায়ে সংসদ সদস্যদের নানা সমালোচনার জবাব দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। একপর্যায়ে আইনমন্ত্রী কিছুটা হাস্যোচ্ছলে বলেন, মাননীয় স্পিকার- অনেক দিন পর এমপিরা আমাকে পানি খাইয়ে দিয়েছেন।