অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর দু দিন ধরে রাজধানীর তেজগাঁওসহ কিছু এলাকা থেকে এক প্রকার উধাও হয়ে গেছে ডিম। এ পরিস্থিতিতে বাজারে ডিমের সরবরাহ বাড়িয়ে দাম কমাতে নতুন সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন থেকে ডিম উৎপাদক বড় প্রতিষ্ঠান ও ছোট খামারিরা সরকার নির্ধারিত দামে সরাসরি তেজগাঁও এবং কাপ্তান বাজারে পাইকারি আড়তে ডিম সরবরাহ করবেন। থাকবে না কোনো মধ্যস্বত্বভোগী। ফলে পাইকাররা নির্ধারিত দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ডিম বিক্রি করতে পারবেন। নতুন এ পদ্ধতিতে আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত ডিম বিক্রি কার্যক্রম চলবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ডিমের দাম ও সরবরাহ নিয়ে আয়োজিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় কাজী ফার্ম, প্যারাগন, সিপিসহ বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি খামারি, তেঁজগাও এবং কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।বাজার নিয়ন্ত্রণে গত ১৫ সেপ্টেম্বর কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ডিমের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে। নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, প্রতিটি ডিমের মূল্য উৎপাদন পর্যায়ে ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ০১ পয়সা ও খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা (ডজন ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা) হওয়ার কথা। তবে এক দিনও এই দরে ডিম বিক্রি হয়নি। ভোক্তাদের এর চেয়ে বেশি দামেই ডিম কিনতে হচ্ছে। গতকাল ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ফার্মের লাল ডিমের ডজন বিক্রি হয়েছে ১৮০-১৯০ টাকায়। বেশ কিছু এলাকায় ছিল ডিমের সংকট। গতকালও তেজগাঁওয়ের বড় পাইকাররা আড়তে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছিলেন। এ সমস্যা সমাধানে এদিন সভা ডাকে ভোক্তা অধিদপ্তর। বৈঠকের পরে আজ থেকে আবার ডিম বিক্রি শুরু করার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বৈঠকে তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, খামারি তথা উৎপাদক পর্যায় থেকে একাধিক হাত ঘুরে তাদের আড়তে ডিম আসে। এর আগেই দাম বেড়ে যায়। এ কারণে তারা নির্ধারিত দামে ডিম কেনা বা বিক্রি কোনোটিই করতে পারছেন না। কেনা দামের ভিত্তিতে বিক্রি করতে গিয়ে উল্টো জরিমানার মুখে পড়েছেন। এজন্য দু দিন বিক্রি বন্ধ রাখা হয়। সভা শেষে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলীম আক্তার খান সাংবাদিকদের বলেন, হঠাৎ ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো মধ্যস্বত্বভোগী। উৎপাদন থেকে পাইকারি পর্যায়ে ডিম বিক্রির ক্ষেত্রে কিছু কারসাজি রয়েছে। আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা পর্যায় পর্যন্ত ডিম পাঁচবার হাত বদল হয়। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে দু-তিনটি হাত (ধাপ) কমবে। ফলে ক্রেতারা কম দামে ডিম কিনতে পারবেন।তিনি জানান, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল (বুধবার) থেকে করপোরেট ব্যবসায়ী ও খামারিরা সরকার নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্যে সরাসরি পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ডিম সরবরাহ করবেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরাও যৌক্তিক দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ডিম বিক্রি করবেন। মাঝখানে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী থাকবে না। বড় ব্যবসায়ীরা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাতে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দামে ডিম পাবেন। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়েও যেন মধ্যস্বত্বভোগী না থাকে, সেদিকও দেখা হবে বলে জানান ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, নতুন এ পদ্ধতিতে আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত ডিম বিক্রি চলবে। এ সময়ে কর্মকর্তারা পর্যালোচনা করে দেখবেন, এই পদ্ধতি আগামী দিনেও চলমান রাখা যাবে কিনা।
আলীম আক্তার খান বলেন, নতুন এই উদ্যোগ সফল হলে পরে ঢাকার বড় বাজারগুলোতে উৎপাদকরা আলাদা জায়গা নির্ধারণ করবেন ডিলারের মাধ্যমে। সেখানে তারা সরাসরি ডিম সরবরাহ করতে পা