বেড়েছে AI কম্পিউটারের বাজারশিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধালেবাননে ইসরায়েলের ৮ শতাধিক সেনা নিহতদেশে গ্যাস উৎপাদন কমছেচালানোর সক্ষমতা নেই এমন কারখানা বন্ধ করা হবে
No icon

বাংলাদেশের প্রধান ঝুঁকি কর্মসংস্থান ও জীবিকা

বাংলাদেশের প্রধান ঝুঁকি হিসেবে কর্মসংস্থান ও জীবিকাকে চিহ্নিত করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)। সংস্থাটির গ্লোবাল রিস্ক রিপোর্ট বা বিশ্ব ঝুঁকি প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বৈশ্বিক পরিস্থিতির পাশাপাশি দেশভিত্তিক পাঁচটি আলাদা ঝুঁকির তথ্য রয়েছে।বাংলাদেশের অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে- ডিজিটাল বৈষম্য, কৌশলগত সম্পদের ভূ-রাজনীতি, মানুষের দ্বারা পরিবেশের ক্ষতিসাধন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় এবং সাইবার নিরাপত্তায় ব্যর্থতা। তবে এসব ঝুঁকির বিষয়ে আলাদা কোনো বিশ্নেষণ নেই। বৈশ্বিকভাবে এসব ঝুঁকি অন্যান্য দেশেও রয়েছে। এগুলোর সামগ্রিক প্রভাব নিয়ে প্রতিবেদনে বিশ্নেষণ রয়েছে।বাংলাদেশ সম্প্রতি জাতীয় মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির সময়ে ১১ লাখ থেকে ১৬ লাখ যুবক বেকার হয়ে থাকতে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ সময়ে অনেক মানুষের আয় কমে থাকতে পারে। প্রায় দুই কোটি মানুষ কর্ম হারানোর ঝুঁকিতে ছিল। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও কর্মসংস্থানের গতি ধীর ছিল। করোনা সংক্রমণ সময়কালে গত দুই বছরে কর্মসংস্থান পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।বিভিন্ন বেসরকারি গবেষণা সংস্থার জরিপ বলছে, বাংলাদেশে এর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ করোনার সময় কাজ হারিয়েছেন। যারা কাজ হারিয়েছেন, তাদের একটি অংশের এখনও কর্মসংস্থান হয়নি। দুই থেকে আড়াই কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যের কবলে পড়ে বলে কয়েকটি সংস্থার জরিপে উঠে আসে।


ডব্লিউইএফ গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর বৈশ্বিক ঝুঁকি-সংক্রান্ত ধারণা জরিপ পরিচালনা করে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে বিশ্বের প্রধান উদ্বেগ জলবায়ুর ঝুঁকি। স্বল্পমেয়াদে উদ্বেগগুলোর মধ্যে রয়েছে- সামাজিক বিভেদ, জীবিকার সংকট এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি। এসব ঝুঁকি করোনার কারণে বেড়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধার স্থিতিশীল হবে না এবং আগামী তিন বছর এ ধরনের অসম পুনরুদ্ধার বজায় থাকতে পারে। উত্তরদাতাদের ১০ জনের মধ্যে মাত্র একজন মনে করেন, অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফেরত আসবে। উত্তরদাতাদের বেশিরভাগই আগামী পাঁচ বছরের জন্য সামাজিক ও পরিবেশের ঝুঁকিকেই প্রধান মনে করছেন।ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যারোলিনা ক্লিন্ট বলেন, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় সামাজিক বিভাজন প্রকট করছে। এটি উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে। কেননা, করোনার প্রভাব থেকে বের হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং একটি বহুপক্ষীয় সমন্বিত উপায় খুঁজে বের করতে হবে।প্রতিবেদনে খারাপ আবহাওয়া, জীবিকার সংকট, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ব্যর্থতা, সংক্রামক ব্যাধি, সামাজিক সংহতির ক্ষয়, মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি, সাইবার নিরাপত্তায় ব্যর্থতা, ঋণ সংকট, ডিজিটাল বৈষম্য, সম্পদের অস্বাভাবিক মূল্যে ধস, অনিচ্ছাকৃত অভিবাসনসহ মোট ৩৭টি ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যর্থতা বিশ্বের জিডিপি ছয় ভাগের এক ভাগ কমে যেতে পারে। এখনও সময় আছে। এ সংকট থেকে বের হতে উদ্ভাবনী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।