৬০ হাজার রোহিঙ্গা বায়োমেট্রিকের আওতায় আসছে?পঞ্চগড়ে ফের তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রির ঘরেগণতন্ত্রের জয়যাত্রা শুরুর বছরমিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশের শঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক বাংলাদেশশুভ বড়দিন আজ
No icon

শুভ বড়দিন আজ

আজ ২৫ ডিসেম্বর। শুভ বড়দিন। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের দিন। দুই হাজার ২৪ বছর আগে এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিষ্ট। বর্তমান ফিলিস্তিনের বেথলেহেমে কুমারী মাতার গর্ভে জন্ম নেন তিনি। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, তিনি ঈশ্বরের পুত্র। পৃথিবীতে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়া, মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করা এবং সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার করতে প্রভু যিশুর এ ধরায় আগমন ঘটেছিল।বড়দিন উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পৃথক বাণীতে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।আজ সরকারি ছুটি। সরকারি-বেসরকারি রেডিও, টিভি ও সংবাদপত্রগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও প্রকাশনার মাধ্যমে দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরবে। বড়দিন উপলক্ষে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিষ্ট ধর্মানুসারীরাও আজ ধর্মীয় আচার ও প্রার্থনার আয়োজন করবেন। দেশের সব গির্জাসহ খ্রিষ্টান পরিবারগুলো ঘরোয়া আয়োজনে ক্রিসমাস ট্রি সাজিয়ে, কেক তৈরি করে এবং মোমবাতি জ্বালিয়ে বড়দিন উদযাপন করবেন। সান্তা ক্লজ শিশুদের মধ্যে উপহার বিতরণের মাধ্যমে আনন্দে ভরিয়ে তুলবেন দিনটি।

রাজধানীর তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জায় (পবিত্র জপমালার গির্জা), কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রাল এবং মণিপুরীপাড়া, বারিধারাসহ সব গির্জায় বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। গির্জার ভেতরে ঐতিহ্যবাহী জাঁকজমকপূর্ণ সাজসজ্জায় গোশালা স্থাপন, রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দনভাবে। রঙিন বাতি ও প্রচুর জরি লাগিয়ে রঙিন করা হয়েছে, বর্ণিল আলোকসজ্জাও করা হয়েছে। বিভিন্ন গির্জা প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বড়দিনের মেলা আয়োজিত হবে। সব গির্জার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও র;্যাব ছাড়াও সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে।ঢাকার পাঁচতারকা হোটেলগুলোও বড়দিনের জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, র;্যাডিসন, লা মেরিডিয়েন, ওয়েস্টিন, ঢাকা রিজেন্সি হোটেলসহ বিভিন্ন হোটেলে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। হোটেলগুলোর লবিতে আছে ক্রিসমাস ট্রি। আজ সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত থাকবে নানা আয়োজন।বড়দিন উপলক্ষে পৃথক বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিত্রয় ঊষাতন তালুকদার, অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব এবং সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ দেশবাসীকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস নিষিদ্ধ

বড়দিনে সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, বড়দিন উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ২৪ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে ২৫ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো ও ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হলো। বিজ্ঞপ্তিতে বড়দিনের অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও নিরাপদে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।এদিকে, মঙ্গলবার রাজধানীর রমনার কাকরাইলে সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রালে বড়দিনের সার্বিক নিরাপত্তা মহড়া পরিদর্শন শেষে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মাসুদ করিম জানান, বড়দিন উপলক্ষে প্রয়োজনীয় সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নগরীর প্রতিটি চার্চে সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উৎসব ঘিরে সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল টিমসহ স্পেশালাইজড ইউনিটগুলোও দায়িত্ব পালন করবে।বর্তমানে সেনাবাহিনী তাদের সঙ্গে আছে। তারাও মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ করিম বলেন, বড়দিন ঘিরে নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। প্রতিবারের মতো এবারও সবার সহযোগিতায় বড়দিন নির্বিঘ্নে ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হবে।এর আগে সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রাল চার্চে ডিএমপির সিটিটিসির সোয়াট, বম্ব ডিসপোজাল টিম ও কে-নাইন টিম উদ্ভূত জরুরি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার বিষয়ে একটি মহড়া প্রদর্শন করে।

সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বড়দিন উপলক্ষে সারাদেশে প্রয়োজনীয় সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় র;্যাবের বিশেষ ফোর্সের কমান্ডো টিমকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।র;্যাব সূত্র জানায়, বড়দিন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ডগ স্কোয়াড ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট সার্বক্ষণিকভাবে গির্জা, উপাসনালয় ও গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানস্থলে প্রয়োজনীয় তল্লাশি করছে। এ ছাড়া র;্যাবের ব্যাটালিয়নগুলো আলাদা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে তাদের দায়িত্বাধীন এলাকার গির্জা কর্তৃপক্ষ, জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করছে। র;্যাব সদরদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মাধ্যমে সারাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হচ্ছে।