
দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর এবার নির্বাচন থেকেও ছিটকে পড়ল আওয়ামী লীগ। গতকাল সোমবার রাতে দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে গেজেট প্রকাশ করা হয়।এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকলে জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলগতভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে না জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দলটির। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গেজেটে আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। ফলে ইসি কোন আইনের অধীনে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা স্পষ্ট নয়।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল বিকেলে গেজেট প্রকাশের পরপরই রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে জরুরি কমিশন সভা বসে। সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি বৈঠকের পর রাত সোয়া ৯টায় ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আপনারা জানেন, আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গসংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। এর ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কীসের ভিত্তিতে নিবন্ধন স্থগিত করা হলো জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন, তার ধারাবাহিকতায় আমরা এটা করেছি।
বৈঠকে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুর রহমানেল মাছউদ, সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।সচিবের এই বক্তব্যের আধা ঘণ্টার মধ্যে ইসি সচিবালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু তাতে কোন আইন বা বিধিমালায় নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে, তা বলা হয়নি। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ইসিও আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করেছে। যদিও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালার কোথাও এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই।এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারের সংস্কার-বিষয়ক জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ইসির প্রজ্ঞাপনে কোন আইনবলে এটা করা হয়েছে, তা উল্লেখ থাকলে ভালো হতো। তিনি বলেন, নিবন্ধন স্থগিত হওয়ার পরে কোনো দলের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকে না।ইসি-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলগতভাবে অংশ নিতে হলে ইসির নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। এই মুহূর্ত থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত কোনো প্রার্থী দলীয় প্রতীকে কোনো ধরনের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।