দল গোছানোসহ সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি আনতে সম্মেলন কার্যক্রম শুরু করছে আওয়ামী লীগ। এর মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন শাখায় নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ কয়েকটি সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পরিকল্পনাও চলছে। ঈদুল ফিতরের পর এসব সম্মেলন করা হবে।এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে আওয়ামী লীগের তৃণমূল সম্মেলন শুরু হয়। গত বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় চার বছরে দলের কয়েক হাজার শাখা সম্মেলন হয়েছে। তবে সংসদ নির্বাচন ও বিরোধী দলের আন্দোলন শুরু হওয়ায় সম্মেলন প্রক্রিয়া নির্বাচন পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। এখন তৃণমূলের অসমাপ্ত সম্মেলনই আবার শুরু হতে যাচ্ছে। ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৬৯টিতে সম্মেলন হয়েছে। ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে বেশির ভাগেরই সম্মেলন শেষ। এর মধ্যেই সম্মেলন হয়ে যাওয়া ৩০টি সাংগঠনিক জেলা কমিটিরও মেয়াদ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ৩৯টি জেলা কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। নতুন করে শুরু হতে যাওয়া তৃণমূল সম্মেলন কার্যক্রমে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাগুলোর সম্মেলন আগে করা হবে। এই জেলাগুলোর আওতাধীন উপজেলাগুলোর সম্মেলন আয়োজনেরও চিন্তা রয়েছে। তবে যে উপজেলায় উপজেলা নির্বাচন হবে, সেখানকার সম্মেলন পরে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২২ জানুয়ারি দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে তৃণমূল সম্মেলন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি স্থগিত হয়ে থাকা তৃণমূল সম্মেলনগুলো শুরুর পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচন ঘিরে নৌকা ও দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং তাদের সমর্থক নেতাকর্মীর দ্বন্দ্ব-কোন্দল নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন। তৃণমূল সম্মেলন নিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ঢাকা জেলা এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের যৌথ সভায়ও আলোচনা হয়েছে।এ অবস্থায় রমজান ও ঈদুল ফিতরের পর মেয়াদোত্তীর্ণ তৃণমূল ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন শুরু হবে বলে দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। এর আগে দলের আটটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ তৃণমূল কমিটির তালিকাসহ অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দল সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি এবং বিবদমান এলাকা চিহ্নিত করার কাজ শেষ হয়েছে। আজ বুধবার থেকে জেলা ও মহানগর নেতাদের ঢাকায় ডেকে যৌথ সভা শুরু করা হচ্ছে। যেখানে তৃণমূলে দলকে অধিকতর গতিশীল করার বিষয়ে আলোচনা করা হবে। বিবদমান নেতাদের দ্বন্দ্ব-কোন্দল মিটিয়ে ফেলার তাগিদও দেওয়া হবে।
সূত্রমতে, যৌথ সভার প্রথম দিন আজ সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাধীন সব জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, দলীয় সংসদ সদস্য এবং যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের জেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে মতবিনিময় করা হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমের সব কেন্দ্রীয় নেতা সভায় উপস্থিত থাকবেন। এর পর পর্যায়ক্রমে রোজার মাসে ধারাবাহিকভাবে বেলা ১১টা থেকে অন্যান্য বিভাগের জেলা ও মহানগর নেতাদের সঙ্গে যৌথ সভা শুরু করে ইফতারের পর শেষ করা হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলাকে ডাকার সম্ভাব্য তারিখ দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ঢাকা জেলা কার্যালয়ে এসব সভা অনুষ্ঠিত হবে।