নির্বাচন বর্জনকারী কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল প্রশাসনিক হয়রানির মুখোমুখি হলে এর দায় নেবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তপশিল ঘোষণার পর বিরোধী জোটের হরতাল-অবরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট সহিংসতা ঠেকাতে শক্তি প্রয়োগেই সমাধান দেখছে সাংবিধানিক এই সংস্থা।তবে রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে ঘোষিত তপশিল রদবদলে আপত্তি নেই ইসি কর্তাদের। সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোট গ্রহণ পেছানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে এর পরে হলে সংবিধানের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন শেষ করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন তারা।গতকাল রোববার ইসির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে বর্তমান রাজনৈতিক পটভূমিতে তাদের এমন অবস্থান জানা গেছে। ইসির দায়িত্বশীলরা মনে করছেন, ২৯ জানুয়ারির আগেই পরবর্তী সংসদের নির্বাচিতদের নামের গেজেট প্রকাশ করতে হবে। সাংবিধানিকভাবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে করতে হবে নির্বাচন। সে ক্ষেত্রে ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ক্ষণগণনা। ১৫ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ১০টি দল এরই মধ্যে জোটবদ্ধ হয়ে ভোটে অংশ নেবে বলে জানিয়েছে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো তপশিল প্রত্যাখ্যান করে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করে আসছে। আওয়ামী লীগসহ বেশ কয়েকটি দল তাদের প্রার্থী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রিও শুরু করেছে।তবে নির্বাচন-সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় হাতে নিয়ে আগেভাগে তপশিল ঘোষণার ফলে রাজনৈতিক সমঝোতার পথ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। যদিও গতকাল সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রাজনৈতিক আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।এ ব্যাপারে এক নির্বাচন কমিশনার বলেন, তপশিল ঘোষণার আগেই বিষয়টি নিয়ে কমিশন সভায় আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে চলমান বিরোধের সমাধান হলে ইসির জন্য নির্বাচন পরিচালনা সবচেয়ে সহজ হবে। এ জন্য প্রয়োজনে ইসি পুনঃতপশিলে পিছপা হবে না। এর আগেও ২০১৮ সালের নির্বাচনের তপশিল পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে সংবিধানের আওতায় নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে হলে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের বেশি নির্বাচন পেছানো সম্ভব নয়।