কবিতার সংজ্ঞা দেওয়া কঠিন। তারপর আবার আধুনিক কবিতা। কবিতা নিয়ে বিভিন্ন সাহিত্যকারের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায়। বিশ্বসাহিত্যে আধুনিক যুগ প্রায় শেষের দিকে। উত্তরাধুনিক যুগ চলছে। অন্যদিকে বাংলা সাহিত্যে আধুনিক যুগই পরিপক্বতা লাভই করতে পারেনি। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিশ্বসাহিত্যের বাঁক ঘুরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সে অর্থে বাংলা সাহিত্যে খুব কমই পরিবর্তন হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ অংশে কিছুটা পুষ্টিলাভ করলেও বাংলাদেশ অংশে খুবই পিছিয়ে। এটার প্রধান কারণ হচ্ছে, আমরা সাতচলিস্নশ পরবর্তী ভাষা নিয়েই বা আমাদের অস্তিত্ব নিয়েই সংকটে ছিলাম। ভাষা আন্দোলন করতে হয়েছে বাংলাদেশে।
সাতচলিস্নশে দেশ-বিভাগের পর কবিরাও ভাগ হয়ে গেছেন। বিনয় কুমার মজুমদার এবং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়সহ কয়েকজন কবি চলে যান পশ্চিমবঙ্গে। এই দেশভাগে ঢাকা-কেন্দ্রিক কবিদের উত্থান ঘটে। হাসান হাফিজুর রহমান, সুফিয়া কামাল প্রমুখ কবিরা এ সময় সমহিমায় উঠে আসেন। নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, অসীম সাহা অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি। সুভাষ মুখোপাধ্যায় আর শক্তি চট্টোপাধ্যায় জনপ্রিয়তা পেয়েছেন কবিতা লিখেই। কিন্তু, দুই-বাংলার কবিতার ভাষা ও স্বর, শব্দ প্রয়োগে ভিন্নতা দেখা যায়। ভাষা-আন্দোলন, স্বাধীনতা-যুদ্ধকেন্দ্রিক ও স্বৈরাচর-বিরোধী বিভিন্ন উপাদান যোগ হয় এপার বাংলায়। প্রেম ও অন্যান্য বিষয়াদি কম গুরত্বপূর্ণ হয়। এখন অবশ্য চেষ্টা চলছে আধুনিক কবিতার পরিধি বিস্তৃতি ও কবিতায় নানা রকম শব্দ-অলংকার প্রয়োগ। ওপার বাংলার কবিরা আগেই শুরু করেছেন এসব নিয়ে। এবার বাংলার কবিদের মাথায় রাখতে হয়েছে অস্তিত্ব টিকে থাকা নিয়ে ভাষা-আন্দোলন, স্বাধীনতা অর্জন ও গণতন্ত্রের বিকাশ নিয়ে। বাংলাদেশের কবিরা। এসব নিয়ে বেশি চিন্তা করতে গিয়েই পিছিয়ে পড়েছেন মনে করি। অস্তিত্ব সংকটে নিমগ্ন থাকলে যে কোনো ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পড়তে হয়। সাতচলিস্নশের কাছাকাছি (আগে ও পরে) যখন ওপারের কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় লিখছেন 'ভালোবাসা পেলে সব লন্ডভন্ড করে চলে যাবো/যেদিকে দুচোখ যায়- যেতে তার খুশি লাগে খুব' (চতুর্দশপদী কবিতাবলি) অথবা ভাবছি ঘুরে দাঁড়ানোই ভালো।/এতো কালো মেখেছি দু-হাতে/এত কাল ধরে!/কখনো তোমার কোরে, তোমাকে ভাবিনি...যাবো/কিন্তু, এখনি যাবো না/তোমাদেরও সঙ্গে নিয়ে যাবো/একাকী যাবো না, অসময়ে'। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখছেন, 'এই হাত ছুঁয়েছে নীরার মুখ/আমি কি এ হাতে কোনো পাপ করতে পারি?/শেষ বিকেলের সেই ঝুল বারান্দায়/তার মুখে পড়েছিল দুর্দান্ত সাহসী এক আলো/যেন এক টেলিগ্রাম, মুহূর্তে উন্মুক্ত করে/নীরার সুষমা/চোখে ও ভুরুতে মেশা হাসি, নাকি অভ্রবিন্দু? তখন সে যুবতীকে খুকি বলে ডাকতে ইচ্ছে হয়'- (সত্যবদ্ধ অভিমান)। তখন এপারের কবি মাহবুব-উল আলম চৌধুরী 'কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি', বা কবি আবু জাফর ওবায়দুলস্নাহ লিখছেন 'কোনো এক মাকে' কবিতায়- 'কুমড়ো ফুল/শুকিয়ে গেছে,/ঝরে পড়েছে ডাঁটা;/পুঁইলতাটা নেতানো,-/খোকা এলি?/ঝাঁপসা চোখে মা তাকায়/উঠোনে, উঠোনে/যেখানে খোকার শব/শকুনিরা ব্যবচ্ছেদ করে...'-র মতো কবিতা লিখতে বাধ্য হচ্ছেন। আরও বললে শামসুর রাহমান 'ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাঁটা' কাব্যগ্রন্থের 'রক্তসেচ' কবিতায় লিখছেন, 'টিক্কার ইউনিফর্মে শিশুর মগজ/যুবকের পাঁজরের গুঁড়ো।/নিয়াজীর টুপিতে রক্তের প্রস্রবণ/ফরমান আলীর টাইএর নিচে ঝুলন্ত তরুণী...তুমি কি তাদের কখনো করবে ক্ষমা?' অথবা 'তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা,/তোমাকে পাওয়ার জন্য/আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?/আর কতবার দেখতে হবে খাবদাহন? (তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা-শামসুর রাহমান)', রুদ্র মুহম্মদ শহীদুলস্নাহর 'বাতাসে লাশের গন্ধ' বা হেলাল হাফিজ 'এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়' ইত্যাদি নিয়ে কবিতায় ব্যস্ত তখন ওপার বাংলার কবিরা লিখছেন, 'ফুল ফুটুক না ফুটুক/আজ বসন্ত (ফুল ফুটুক না ফুটুক -সুভাষ মুখোপাধ্যায়)', 'আমরণ আসঙ্গলোলুপ,/আমি জানি আকাশ-পৃথিবী/আমি জানি ইন্দ্রধনু প্রেম আমাদের (ঊর্বশী- বিষ্ণু দে)', 'এতই অসাড় আমি, চুম্বনও বুঝিনি।/মনে মনে দিয়েছিলে, তাও তো সে না-বোঝার নয়-/ঘরে কত লোক ছিল, তাই ঋণ স্বীকার করিনি।/ভয়, যদি কোনো ক্ষতি হয়।(স্পর্শ- জয় গোস্বামী)', 'সবকিছু মুছে নেওয়া এই রাত্রি তোমার সমান পালকের মতো এসে বুকের ওপরে হাত রাখে/যদিও জানি যে তুমি কোনোদিনই চাওনি আমাকে (পালক- শঙ্খ ঘোষ)'-র মতো রোমান্টিসিজম শবদ বুননের কবিতা।
গ্রিক কবি ও দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছেন, 'কবিতা দর্শনের চেয়ে বেশি, ইতিহাসের চেয়ে বড়।' সাহিত্যের একটি প্রাচীনতম শাখা হচ্ছে কবিতা। বর্তমান সময়ে সাহিত্য জগতে শিল্প-সংস্কৃতিতে কবি ও কবিতার শ্রেষ্ঠত্ব বেড়েই ছলেছে। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত যুগসন্ধিকালের কবি। তিনি মধ্যযুগের শেষ কবি এবং আধুনিক যুগের প্রথম কবি। রবীন্দ্রনাথ আধুনিক কবিতা&;লেখা শুরু করলেও আধুনিক কবিতা পূর্ণতা পায় ত্রিশের কবিদের হাতেই। একই সালে জন্মগ্রহণ করলেও নজরুলের চেয়ে ভিন্ন ধারায় কবিতা লেখেন জীবনানন্দ দাশ। তিনিই প্রথম সফল ও সার্থক গদ্য কবিতা রচনা করেন। 'বনলতা সেন' যেমন জীবনানন্দের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ, তেমনি নজরুলের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ 'অগ্নি-বীণা'। বাংলা জনপ্রিয়তম কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে এ দুটি অন্যতম। ত্রিশের প্রধান পাঁচ কবির অন্যরা হলেন অমিয় চক্রবর্তী, বিষ্ণু দে, বুদ্ধদেব বসু ও সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। ত্রিশের দশকের আরও গুরুত্বপূর্ণ কবি রয়েছেন : প্রেমেন্দ্র মিত্র, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত প্রমুখ। ত্রিশের কবিরাই মূলত আধুনিক কবিতার পুরোধা। সমসাময়িক কবি জসীমউদ্দীন কিন্তু যুগের সঙ্গে তিনি হাঁটেননি। তিনি মধ্যযুগের মতো কাহিনীকাব্য রচনা করে আলোচিত হয়েছেন। আহসান হাবীব ও সৈয়দ আলী আহসান চলিস্নশের অন্যতম প্রধান কবি। সৈয়দ আলী আহসান ভাঙা গদ্য ও টানা গদ্য কবিতাও লিখেছেন। এপারের ময়ূখ চৌধুরী, নির্মলেন্দু গুণ, অসীম সাহারা আধুনিক কবিতায় সফল। ওপারের সুনীল গঙ্গোপাধ্যয়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, শঙ্খ ঘোষ, জয় গোস্বামীরা আধুনিক কবিতায় পারঙ্গমতা দেখিয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।আধুনিক কবিতার ক্ষেত্র হিসাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, আধুনিকতা মর্জির ওপর নির্ভর করে। আমরা দেখি, রবীন্দ্রবলয় থেকে বেরিয়ে আসতে অগ্রণী-ভূমিকা পালন করেছেন তিরিশের কবিরা; বিশেষত পঞ্চপান্ডব। কিন্তু, দেখা যায়, এদের মধ্যেও চিন্তাভাবনার পার্থক্য রয়েছে। কবিতায় শব্দ ও তাদের ভাষারীতির প্রয়োগ লক্ষ্য করলেই এটা বুঝে নিতে পাঠকের অসুবিধা হবে না। আধুনিক কবিতার ক্ষেত্রে ইংরেজি, রাশান বা অনেক ভাষার ক্ষেত্রে প্রয়োগ ও অবয়বে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। বাঁকবদলে নতুন নতুন শব্দের প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। সেক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে, নতুন শব্দভান্ডার সৃষ্টি করতে পেরেছি খুব কমই। ভাষারীতির পার্থক্যটাই কেবল বাংলাসাহিত্যের আধুনিকতা স্থির করা যায়। এ বিবেচনায় ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের কবিতায় প্রথম আধুনিকতা দেখা যায়। কিন্তু সার্থক আধুনিক বলতে গেলে মাইকেল মধুসূদন দত্তের হাতেই শুরু হয়েছে। অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রয়োগ বড় ভূমিকা পালন করেছে। পরে তিরিশের কবিরা আধুনিক কবিতায় পুষ্টি দিয়েছেন। কিন্তু, আধুনিক কবিতার প্রধান বিষয় মানুষ। মানুষকে ঘিরে মানবতা, কুসংস্কার ও অদৃশ্য মতবাদ থেকে যুক্তিগ্রাহ্যতা গ্রহণ ইত্যাদি এখনো বাংলাসাহিত্যে পরিপূর্ণতা পায়নি। কিন্তু ইংরেজি, রাশান, জার্মান প্রভৃতি সাহিত্যে অনেক আগেই শুরু হয়েছে। দুই বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে কবিতায় নতুন ধারণা ও শব্দাবলি যুক্ত হয়েছে। অলংকারেও পরিবর্তন দেখা যায়। নাগরিক-হতাশা যুক্ত হয়েছে, মানবতাবোধ জাগ্রত হয়েছে। ফলে, আধুনিক কবিতা সার্থক হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাসাহিত্যে গুটিকয়েক কবি সার্থক ভান্ডারসমৃদ্ধ আধুনিক কবিতা লিখতে পেরেছেন। বেশিরভাগ কবিকেই চক্রের মধ্যে আবদ্ধ থাকতে হয়েছে। বলা যেতে পারে প্রয়োগে ব্যর্থ হয়েছেন।
বাঙালির মধ্যে ইংরেজি সাহিত্যের পাঠক কম। ভালো অনুবাদ খুব কমই। ফলে বিশ্বসাহিত্য নিয়ে সম্যক ধারণা বেশিরভাগ কবির ক্ষেত্রেই নেই। এক্ষেত্রে আমরা ভালো কবিতা সৃষ্টি খুব কমই করতে পারছি। বাংলাসাহিত্য ইংরেজিতে অনুবাদ হচ্ছে খুব কম। যেগুলো অনুবাদ হচ্ছে তার বেশিরভাগই নিম্নমানের অনুবাদ। ভারতীয় ইংরেজি পশ্চিমাদের আকর্ষণ করতে পারে খুব কমই। ফলে, ভালো অনুবাদের অভাবে বাঙালি ভালো কবিদেরও বিশ্বপাঠক নেই-ই। ইংরেজি পাঠক না থাকায় প্রকাশকরাও ইংরেজি কবিতা প্রকাশে এগিয়ে আসে না। অবশ্য ভারতীয় অংশে এতো দৈন্যদশা নেই। বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা চলছে। ভারতীয় অনেক ইংরেজি সাহিত্যের পাঠক রয়েছে। বাঙালি কবিদের কবিতা অনেক সংখ্যায় ইংরেজি ভার্সন বের হয়। বিশ্বসাহিত্যের বিভিন্ন নামকরা পোয়েট্রি সাইটে ভারতীয় অনেক কবি-পাঠক সক্রিয়। কিন্তু বাংলাদেশি অংশে খুব কমই। বলা যায়, বাংলায় আমরা ঠিকমতো রপ্ত করতে পারেনি। আমরা কয়জন ভাষাবিজ্ঞানী পেয়েছি? আমরা কয়জন সত্যিকারের সাহিত্য সমালোচক পেয়েছি? আমরা কয়জন নিরপেক্ষ ও দক্ষ সাহিত্য সম্পাদক পেয়েছি? পশ্চিমবঙ্গ সাহিত্য প্রতিটি ক্ষেত্রে অনেক কিছুই পেয়েছে। আমরা মাঝেমধ্যে পেয়েছি। দুজনের মধ্যে অনেক সময় নিয়েছি। দক্ষ একজন মারা গেলে বিকল্প পাচ্ছি না- হাহুতাশ করছি। ওপারে কিন্তু এতো সংকট নেই। আমাদের মতো এমন পাঠকসংকটও নেই। ওপারের ম্যাগ/পত্রিকায় চাকচিক্য নেই; কিন্তু পরিপুষ্ট। আর আমাদের বেশিরভাগই ফাঁকা; শুধু চাকচিক্য। উভয়ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম তো থাকতেই পারে! ফাঁকা-ফাঁকা সাহিত্যের জন্য সাহিত্যে আমরা সত্যিকারের মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার-পদক পাচ্ছি না! লুইস গুস্নইকের মতো কবিতা আমাদের কেউ কেউ লিখছেন না?-অবশ্যই লিখছেন। কিন্তু বিশ্বসাহিত্যে তালমিলাতে পারছি না। বলা চলে, ভালো ও প্রচুর পরিমাণে অনুবাদ না হওয়ায় বিশ্বে বাংলা সাহিত্যের পাঠক প্রায় নেই-ই। আন্তর্জাতিক সাহিত্যে এ একটি কারণেই অনেক পিছিয়ে। আর একটা কারণে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক সাহিত্য আসর/আলোচনায় আমরা যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারছি না! ফলে আমাদের মনোনীত ব্যক্তিরা যখন আলোচনা করেন, বিশ্বপাঠকরা হতাশই হন। যথার্থ শব্দপ্রয়োগ করা হয় না, কবিতায় 'আন্তর্জাতিক শব্দের জুতসই ব্যবহার' খুব কম হওয়াও দায়ী। অস্তিত্ব সংকট মোটামুটি কেটে গেছে। পাশ্চাত্য ধারায় অভ্যস্তও হচ্ছি আমরা। এবার কবিতা বা বাংলাসাহিত্যে গতি আসুক। ওপার বাঙলার প্রকাশকরা ইংরেজি বা অনুবাদ সাহিত্যে বেশ পৃষ্ঠপোষকতা অনেক আগেই শুরু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের ভারতীয় প্রবাসী-বাঙালির লেখক-পাঠকের বড় একটা অংশ অনুবাদ বা সাহিত্যে আন্তরিকতার সঙ্গেই জড়িত হচ্ছেন। এবার এপার বাংলার লেখক-পাঠকের এগিয়ে আসতে হবে-বড় অংশ আন্তরিকতা দেখাতে হবে। শুধু নিজের চিন্তা বাদ দিয়ে সমগ্র বাঙালির কবিতা বা সাহিত্য নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের। সরকারের পৃষ্টপোষকতা বাড়ানোও দরকার। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরপেক্ষতা ও আরও আন্তরিকতা দেখালে বিশ্বসাহিত্যে একটু একটু করে আমাদের মর্যাদা পেতে শুরু করব। আমাদের কিন্তু গস্নুকদের মতো মনেক ভালোমানের কবি ছিলেন বা রয়েছেন-যদিও তুলনামূলক সংখ্যায় অনেক কম। কবিতা বা সাহিত্যে আঞ্চলিকতার শব্দ পরিহার করে বেশি পরিচিত উপাদান, অলংকার বা ক্ষেত্রমতে বিশ্বপাঠকের কাছে অধিক পরিচিত আন্তর্জাতিক শব্দ-অলংকারে কবিতার বুনন দিই। তাহলেই আমরা এগিয়ে যেতে পারব।