
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের উপর অবিলম্বে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত হামাস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রস্তাবের বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, অবিলম্বে তারা গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির জন্য আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত।হামাসের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা একটি গঠনমূলক ও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করেছি এবং আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছি।চুক্তির আওতায় রয়েছে- ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি, গাজায় ত্রাণ প্রবেশে নতুন ব্যবস্থা এবং ইসরায়েলি বাহিনীর ধাপে ধাপে প্রত্যাহার।হামাস জানিয়েছে, তারা কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় আলোচনায় অংশ নেবে, যেখানে পক্ষগুলো সরাসরি মুখোমুখি না হয়ে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনার পর্যায় অগ্রসর হবে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি গত কয়েক মাসের সংঘাতের মধ্যে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত শান্তিপ্রচেষ্টা।হামাসের নেতারা স্পষ্ট করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির শর্ত হতে হবে স্থায়ী ও বাস্তবসম্মত ।তারা দাবি করেছে- যুদ্ধবিরতির সময়সীমা শেষ হলে অবস্থানের কোনো অনিশ্চয়তা থাকবে না। গাজায় ত্রাণ সরবরাহ ও পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বাধাহীন প্রবেশাধিকার থাকতে হবে। ইসরায়েলকে নির্দিষ্ট সময়সূচি দিয়ে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে।
ঊর্ধ্বতন এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, হামাস সাধারণ কাঠামো মেনে নিয়েছে, তবে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীর অনুরোধ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধের স্থায়ী অবসান।তবে হামাসের এ বিবৃতির পর ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। যদিও তারা পূর্বে একই ধরণের দাবি মেনে নিতে অনিচ্ছুক ছিল।এদিকে হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদ বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার পরিকল্পনাকে তারা সমর্থন করে, তবে নিশ্চয়তা থাকতে হবে যে এই প্রক্রিয়াটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দিকে পরিচালিত করবে।গত সোমবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওয়াশিংটন সফরের আগে এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি দলগুলির সঙ্গে পরামর্শ করার পর এই ঘোষণা আসে। কারণ ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধের অবসানের জন্য জোর দিচ্ছেন।এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলি যুদ্ধে কমপক্ষে ৫৭ হাজার ২৬৮ জন নিহত এবং ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬২৫ জন আহত হয়েছেন।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশিকে বন্দী করা হয়।