লিটারে ১৪ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলের দামদেশবাসীকে বৈশাখের শুভেচ্ছা প্রধান উপদেষ্টাররমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরুপহেলা বৈশাখে আজ রাজধানীর কোথায় কী আয়োজনমধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে ইলিশের দাম
No icon

ফিলিস্তিনের পাশে বাংলাদেশ

জনতার ঢল আর স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। দুই হাতে শক্ত করে ধরা বাংলাদেশ আর ফিলিস্তিনের পতাকা। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সব মানুষের কণ্ঠে প্রতিবাদী স্লোগান। গাজায় চলমান গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে লাখো মানুষ জানান দেন, আমরা ফিলিস্তিনির পাশে আছি। এ সময় ঘোষণা দেওয়া হয় ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা কামনায় মোনাজাতে কাঁদেন লাখো মানুষ। এভাবেই গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হলো পূর্বঘোষিত মার্চ ফর গাজার বিশাল গণজমায়েত।প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে এই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), হেফাজতে ইসলামের বিভিন্ন নেতা, ইসলামি বক্তাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। সমাবেশে পাঁচ দফা দাবিতে একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। এতে ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সব চুক্তি বাতিলের দাবিসহ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ এবং মুসলিম বিশ্বকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানানো হয়।উদাত্ত আহ্বান বক্তাদের : এ সময় বক্তারা বলেন, দেশে দল-মত, দর্শন ভিন্ন হলেও মানবতার প্রশ্নে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে পুরো বাংলাদেশ। একই সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর নমনীয়তা ও নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করা হয়। বক্তারা জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকা পালনের দাবি জানান।

গণজমায়েতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি। বিশ্বমানবতার শত্রু ইসরায়েল ফিলিস্তিনিতে যে গণহত্যা সংঘটিত করেছে, তাকে ধিক্কার জানাতে সারাদেশ থেকে এসেছে এই গণজমায়েত। সারা বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশের মানুষ এই গণহত্যার ধিক্কার জানিয়েছে। আমরাও তাতে শরিক হয়েছি। তবে দুঃখের বিষয়, মুসলিম বিশ্বের মোড়ল রাষ্ট্রগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে না এবং ওআইসি নিষ্ক্রিয় রয়েছে। আমরা জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ফিলিস্তিনির পূর্ণ স্বাধীনতা প্রত্যাশা করছি।জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গাজায় ইসরায়েলের নিন্দনীয় হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এর প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত এই গণজমায়েতের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি। আমরা মনে করছি, এই মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ না হওয়া জাতিসংঘের ব্যর্থতা, ওআইসির ব্যর্থতা। এটি খুবই নিন্দনীয় এবং উদ্বেগজনক।আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের সব দল, মত, চিন্তা-দর্শনের মানুষ মজলুম ফিলিস্তিন ও মজলুম গাজার পাশে আছে, সহাবস্থান করছে। আমরা এক কাতারে দাঁড়িয়ে আজ বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিতে চাই, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন চিন্তা, মতগত পার্থক্য, ভিন্নতা থাকতে পারে; কিন্তু মজলুম ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, ভূমির অধিকারের দাবিতে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।

সমাবেশে ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ভৌগোলিকভাবে আমরা ফিলিস্তিন থেকে অনেক দূরে হতে পারি; কিন্তু আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা গাজা, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা আল কুদস।আজকের এই জনসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল আকসার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেন আজহারী। তিনি বলেন, আজকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, এই গণজমায়েতে, এই জনতার গণসমুদ্রে উপস্থিত হয়ে আমরা বুঝতে পেরেছি, আজকের এই মহাসমুদ্র, জনসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল আকসার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।