বাংলাদেশিদের জন্য একটি সম্ভাবনাময় শ্রম বাজারের নাম ব্রুনাই দারুসসালাম। দক্ষিন চীন সাগর বেষ্টিত এই দেশটিতে বাংলাদেশী শ্রমিকের রয়েছে প্রচুর চাহিদা । তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে ও প্রায় ৫০ হাজার প্রবাসীর কর্মসংস্থান ছিল এই ছোট্র দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে। কিন্তু এই ধারাবাহিকতার ছন্দপতন হওয়া শুরু হয় ২০১৮ সালের দিকে বাংলাদেশ হাই কমিশনের লেবার উইং এর প্রথম সচিব (শ্রম) জিলাল হোসেন সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে । শেখ হাসিনা এর আস্থাভাজন হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে দুর্নীতির একচ্ছত্র সাম্রাজ্য কায়েম করেছিলো জিলাল হোসেন সিন্ডিকেট শুধু তাই নয় বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিজস্ব ভবন তৈরিতে জিলালের সিন্ডিকেট রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ, গড়েছে সম্পওির পাহাড় । প্রবাসী ব্যবসায়িদের কাছ থেকে নিয়মিত কমিশন আদায়, মাসিক চাঁদা আদায় প্রবাসী কর্মীদের ভিসা স্বত্বায়নের জন্য ৫০০ টাকা করে ঘুষ যিনি দিবেন না তিনি জিলাল সিন্ডিকেটের কাছে একজন আদর্শ মানব পাচারকারি । তার নামে ব্রুনাইতে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে অভিযোগ, দেশে লোক দিয়ে মামলা করানো এবং সর্বোপরি তার পাসপোর্ট বাতিল করা ছিল তার নিয়মিত কাজ। হাইকমিশনের দুর্নীতি ও হয়রানির প্রতিবাদ করায় গত ২০১৯ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে প্রায় ২০ জন্য প্রবাসী শ্রমিক ও ব্যবসায়ীকে দেশে ফিরতে বাধ্য করা হয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাদের বিরুদ্বে শ্রমিকদের দিয়ে ভুয়া অভিযোগ করাচ্ছে লেবার উইং। ভুক্তভোগীরা জানান হাইকমিশনের কোন কর্মকর্তার বিরুদ্বে অনিয়মের অভিযোগ করা হলে প্রবাসীদের পাল্টা আক্রমণ এবং নির্যাতনের শিকার হতে হয়। মিথ্যা, মানবপাচার বা চুরি মামলার আসামি হয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে অনেক শ্রমিককে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় কামরুল নামের এক শ্রমিককে নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয় ব্রুনাই হাইকমিশনের ভেতরেই। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
নির্যাতনের শিকার কামরুল হাসান দায়ীদের বিরুদ্বে মামলা করেন। পরে মামলা উঠানোর জন্য হাইকমিশন থেকে ভয়ভীতি দেখানো হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে । ২০১৮ সালে ৭ মার্চ অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় মনির হোসেন বাদি হয়ে ব্রুনাই ব্রাকাস থানায় মেডিক্যাল রিপোর্টসহ ২০১৮ সালে ৮মার্চ মামলা করেন। মামলায় নির্যাতনের তথ্য-উপাও তুলে ধরা হয়। মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেয়া হয়। আর যদি মামলা তুলে না নেয়া হয় তখন মানব পাচার আখখা দিয়ে পাসপোর্ট বাতিল করে দেওয়া হয় । এভাবে মিথ্যা মানব পাচারের অভিযোগ দিয়ে কত প্রবাসীদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে তার কোন হিসাব নাই। গত সরকারের সময় ভুক্তভোগীরা এর কোন প্রতিকার পাননি। হাই কমিশনের এই অনিয়মের কারণে বাংলাদেশী শ্রমিক কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে l এভাবে চলতে থাকলে ব্রুনাই দারুসসালামের শ্রম বাজার হারাতে পারে এক সময়ের ৫০ হাজার প্রবাসীর এই জনপদ ।বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন-সরকারের-প্রধানউপদেষ্টা ড. উইনুসের কাছে প্রবাসীদের দাবি অতিদূরত ব্রুনাই শ্রম বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাতিলকৃত ব্যাক্তিদের পাসপোর্ট প্রদান ও প্রবাসী বান্ধব হাইকমিশন একান্ত জরুরি।