সারা দেশে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ আজডিসেম্বরেই নির্বাচন দিতে হবে, আগে রোডম্যাপবাংলাদেশ ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তাগাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫২ ফিলিস্তিনি নিহতসকালের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের শঙ্কা
No icon

গাজায় গণহত্যায় সমর্থন দিয়ে যাওয়ায় মার্কিন সেনাহ্যারিসন মানের পদত্যাগ

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি গণহত্যার প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন মার্কিন সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এক সেনা কর্মকর্তা সোমবার ঘোষণা করেছেন, গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনে ওয়াশিংটনের সমর্থনের প্রতিবাদে তিনি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগকৃত ওই সেনা কর্মকর্তার নাম হ্যারিসন মান। তিনি মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা। হ্যারিসন মান তার পদত্যাগের চিঠি নিজের লিঙ্কডইনে প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, “গত ছয় মাস ধরে যে নীতিটি আমার মন থেকে কখনও দূরে ছিল না, তা হলো- ইসরাইলকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ‘অকুণ্ঠ সমর্থন’; যা হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা ও অনাহারে রাখতে ভূমিকা রেখেছে। হ্যারিসন বলেন, “এটি আমাকে অবিশ্বাস্য লজ্জা দিয়েছে এবং আমার অপরাধবোধের কারণ হয়েছে। এই ‘নিঃশর্ত সমর্থন’ সংঘাতের বেপরোয়া বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে যা বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করে। যুক্তরাষ্ট্রের গাজা নীতির প্রতিবাদে মার্কিন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের গাজা নীতির বিরোধিতা করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরবি ভাষার মুখপাত্র হালা রাহারিত পদত্যাগ করেন। তার আগে গত মার্চ মাসে একই কারণে পদত্যাগ করেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মানবাধিকার কর্মকর্তা অ্যানেল শেলিন। বাইডেন প্রশাসনের গাজা নীতির প্রতিবাদে শেলিনের পদত্যাগের আগে গত বছরের অক্টোবরে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাজনৈতিক-সামরিক বিষয়ক ব্যুরো কর্মকর্তা জশ পল পদত্যাগ করেন। এছাড়া একই কারণে গত জানুয়ারিতে পদত্যাগ করেন মার্কিন শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা তারিক হাবাশ। উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের আন্তঃসীমান্ত হামলায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরাইলি নিহত হোন। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো এ হামলা অব্যাহত আছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত মানুষের সংখ্যা ৭৮ হাজার ছাড়িয়েছে। জাতিসংঘের মতে, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে ভূখ-ের ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেই সঙ্গে অঞ্চলটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘ আরও বলছে, দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। এছাড়াও খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরমক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুেিত ভুগছেন। ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আইসিজে একটি অন্তর্র্বতী রুল জারি করে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কাজ বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের গ্যারান্টি দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়।