গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। এতে যুক্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তিনি সোমবার মধ্যপ্রাচ্য সফরের প্রথম দিনে পৌঁছেছেন সৌদি আরবে। অন্যদিকে ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনায় একই দিনে মিশরের রাজধানী কায়রো পৌঁছেছেন হামাস নেতারা। তবে সেখানে হামাস-ইসরাইল মুখোমুখি আলোচনা হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদের কিছু কট্টরপন্থি মন্ত্রী তাকে সাবধান করেছে। তারা নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে বলেছে, যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেন তাহলে নেতানিয়াহুর সরকারের পতন হবে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে যখন এমন আলোচনা চলছে তখন রাফা এবং গাজা সিটিতে রোববার দিবাগত রাতে হামলা অব্যাহত রাখে ইসরাইল। এতে কমপক্ষে ২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল জাজিরা বলছে, অব্যাহতভাবে যুদ্ধ পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন ইসরাইলের সেনাপ্রধান। ৭ই অক্টোবর থেকে এই যুদ্ধে কমপক্ষে ৩৪,৪৫৪ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৭,৫৭৫ জন। দখলীকৃত পূর্ব জেরুজালেম থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক স্টেফানি ডেকার বলেছেন, সোমবারই কায়রোতে হামাস প্রতিনিধি ও ইসরাইলের সঙ্গে মিটিং করবে মিশর। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে সামনে এগিয়ে নিতে মিশর খুব আগ্রহী। কারণ, এতে তাদের স্বার্থ আছে। গাজার দক্ষিণে রাফার ভৌগোলিক অবস্থান তাদের সীমান্তে। এ জন্য তারা হামাস এবং কাতারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, যাতে তারা একটি চুক্তিতে আসে। এর আগে ইসরাইল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়। আলোচনায় এখন যা আছে তা হলো, হামাসকে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। এর মধ্যে আছেন নারী, অসুস্থ, প্রবীণরা। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে ইসরাইল। ইসরাইলের দাবি, এর মধ্যে অনেকে আছেন দাগি অপরাধী। অর্থাৎ তারা ফিলিস্তিনের সিনিয়র বন্দি। এ অবস্থায় ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেছেন, যদি হামাসের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়, তাহলে রাফায় আসন্ন অভিযান স্থগিত হতে পারে। কিন্তু ইসরাইল সরকারের মধ্যে বিভক্তি আছে। রাফায় সামরিক অভিযান বন্ধ করে দেবে, এমন যেকোনো রকম চুক্তির বিরোধিতা করেন উগ্র ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। রোববার তিনি এমন কথা বলেছেন। উল্লেখ্য, রাফায় ইসরাইলের স্থল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ব সম্প্রদায়। এর মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইসরাইলের কিছু মিত্রও। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সোমবার আবারো বলেছেন, রাফায় ইসরাইলের আক্রমণ পরিকল্পনার বিরোধী ওয়াশিংটন। তার আগে রোববার রাফায় ভয়াবহ আক্রমণের বিরুদ্ধে সতর্কতা দিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। রাফায় হামলা না চালাতে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, এই অপরাধ সংগঠন থেকে ইসরাইলকে থামাতে সক্ষম একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রই।