নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন আর নেইদেশজুড়ে নির্বাচনি আমেজআজ প্রাথমিকের শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিভূমিকম্পে কাঁপল পাকিস্তানের বেলুচিস্তানযেমন থাকবে আজকের আবহাওয়া
No icon

দেশজুড়ে নির্বাচনি আমেজ

দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর গতকাল ছিল প্রথম শুক্রবার। প্রার্থী হিসেবে যাঁদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তাঁরা প্রায় সবাই গতকাল যাঁর যাঁর নির্বাচনি এলাকায় অনানুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন। সরকারি ছুটির দিন আজ শনিবারও প্রত্যেকে থাকবেন নির্বাচনি এলাকায়। প্রার্থীদের নির্বাচনি এলাকায় গণসংযোগ, মসজিদে জুমার নামাজ আদায়, দোয়া কামনাসহ নানা কর্মকাণ্ডে সারা দেশে নির্বাচনি ঢেউ লেগেছে। প্রার্থীরা শুধু গণসংযোগই করছেন না, মনোনয়নপ্রত্যাশী দলীয় অপর নেতাদের সঙ্গেও শুভেচ্ছবিনিময় করছেন। সবাই মিলে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বানচালের যে অপচেষ্টা শুরু হয়েছে তা রুখে দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।এদিকে নির্বাচন বানচাল করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের বিরুদ্ধে নানারকম মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রচারণা চালাচ্ছে। এ ধরনের অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, নির্বাচনি মাঠ ততই উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে।

এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে বা আরও প্রায় এক মাস পর। কিন্তু এরই মধ্যে অনানুষ্ঠানিক নির্বাচনি প্রচার শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সহিংসতায় অক্টোবর মাসে নিহত হয়েছেন ১০ জন। বিশেষ করে জুলাই সনদ এবং গণভোট প্রশ্নে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই ২৩৭টি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। বাকি ৬৩টি আসনের মধ্যে কিছু আসন বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিকদের জন্য রাখা হয়েছে। মনোনয়ন লাভের জন্য এসব আসনের প্রার্থীরাও নির্বাচনি এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু বিএনপি নয় নির্বাচনি উত্তাপে দেশের অন্য দলগুলোও পিছিয়ে নেই। তাঁরাও ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে হয় প্রার্থী বাছাই করার কাজটি করে ফেলেছে অথবা প্রক্রিয়ায় আছে। জামায়াতের সারা দেশের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা নির্বাচনি মাঠ চয়ে বেড়াচ্ছেন। পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পুরো মাত্রায় নির্বাচনে মনোযোগী হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে। এনসিপির বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনি জোটও হতে পারে।

এনসিপি ছাড়াও আওয়ামী লীগবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিএনপি ছাড় দিচ্ছে। জামায়াত নির্বাচন সামনে রেখে জোট গঠন না করলেও বিএনপির মতোই চলমান আন্দোলনে সঙ্গে থাকা দলগুলোকে আসন ছাড় দেবে। সব মিলিয়ে নির্বাচনি ট্রেন এখন দ্রুতগতিতে ফেব্রুয়ারির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কে কোন আসনে প্রার্থী হলেন, কার কেমন যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা, সেই আলোচনা আর তর্কবিতর্কে সারা দেশ এখন সরগরম। গ্রামগঞ্জের ছোটবড় চায়ের দোকানে ধূমায়িত চায়ের সঙ্গে নির্বাচনি উত্তাপও ছড়িয়ে পড়েছে।সরকারপ্রধানের ঘোষিত সময় অনুসারে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনও নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও আইনানুগভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে আনছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও নির্বাচনের জন্য সরকার প্রস্তুত করছে। মাঠপর্যায়ের প্রশাসনকেও পুনর্বিন্যস্ত করা হচ্ছে। নির্বাচনসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ১৫ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সরকার ও নির্বাচন কমিশন বলছে, দেশের ইতিহাসের দৃষ্টান্তমূলক শ্রেষ্ঠ নির্বাচন করতে চায় তারা। দেশের মানুষও সেটাই প্রত্যাশা করে।