শিক্ষক সংকট দীর্ঘায়িত, শূন্য থাকবে ৪০ হাজারের বেশি পদঝড়বৃষ্টির শঙ্কায় নদীবন্দরে সতর্কতা সংকেতগাজায় হত্যাযজ্ঞে আরও ৭৮ ফিলিস্তিনির মৃত্যুকরোনার উচ্চ ঝুঁকিতে চার রোগে আক্রান্তরাফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে, এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না: মির্জা ফখরুল
No icon

ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে, এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না: মির্জা ফখরুল

আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে, এ কোনো ব্যতিক্রম হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র চাই। আমাদের লক্ষ্য একটাই, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে।গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, অপপ্রচার এবং মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে লাল চাঁদ সোহাগকে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এই কর্মসূচি আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। ফকিরাপুল থেকে কাকরাইলের নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে হাজারো নেতাকর্মী এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন। পরে মিছিলটি বিজয়নগর দিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন ঠিক হওয়ার পরের থেকে ষড়যন্ত্রকারীদের মাথা বিগড়ে গেছে। যখন লন্ডনে বৈঠক করে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমান নিশ্চিত করে ফেলেছেন যে এবার নির্বাচন হবে, তখন থেকেই তাদের মাথা বিগড়ে গেছে। যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই সময়টাতে নির্বাচন চাই। আমরা ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। জনগণের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা ও চাকরির সংস্থান করতে চাই। আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন এক বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই।

নিজ দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, আমরা যেন কারও পাতানো ফাঁদে পা না দিই। তারা চেষ্টা করছে আমাদের উত্তেজিত করে তাদের পাতা ফাঁদে পা দেওয়ার জন্য, যাতে আমরা উত্তেজিত হয়ে যাই।বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা আজকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বলে, তারা গণতন্ত্রের শত্রু। যারা দেশের বিরুদ্ধে বলে, তারা গণতন্ত্রের শত্রু। তারা এই দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আমাদের কোনো আপস নেই। আমি ধিক্কার জানাচ্ছি ওই সমস্ত তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাকে, যারা তারেক রহমান সম্পর্কে অশ্লীল-অশ্রাব্য কথা বলেছেন।তিনি আরও বলেন, ইস্পাতকঠিন দৃঢ় ঐক্য নিয়ে ১৫ বছর আমরা যে লাঞ্ছিত হয়েছি, নির্যাতিত হয়েছি, নিপীড়িত হয়েছি; সেই ঐক্য নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।আমি সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাব আসুন, গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একযোগে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে লাল চাঁদ সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, এই খুনের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ রূপে তদন্ত হতে হবে। যারা দায়ী, তাদের খুঁজে বের করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এটি যারা করছে, তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য করছে।

তিনি বলেন, ওদের পরিকল্পনাটা অত্যন্ত ভয়াবহ। বাংলাদেশে আবার একটা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা, অস্থিরতা সৃষ্টি করা, বিভাজনের সৃষ্টি করা; বাংলাদেশকে আবার একটা জায়গায় নিয়ে আসা, যেখানে গণতন্ত্র আবার তিরোহিত হবে।বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমরা জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা একসঙ্গে হয়ে ফ্যাসিস্টদের বিতাড়িত করেছি, আবার ফ্যাসিস্টদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য নয়। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, কোনোদিন যেন ফ্যাসিজম এ দেশে চালু হতে না পারে, তার ব্যবস্থা আমরা করব।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, মিটফোর্ডের সামনে ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। যে ছেলেটাকে হত্যা করা হয়েছে, সেই ছেলেটা বিএনপি করত। তার পরিবার-পরিজন বিএনপির সমর্থক। এই মর্মান্তিক সহ্য করার মতো নয়। এ ঘটনা থেকে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে কারা এটি আপনাদের ভাবতে হবে। এ ঘটনা যখন ঘটে, ক্যামেরাপারসন ছবি তুলেছে, কোনো নড়াচড়া নেই, কোনো কাঁপুনি নেই। খেয়াল করে দেখবেন, ভিডিওটি মনে হয় একেবারে তৈরি করা ভিডিও। অর্থাৎ এই ঘটনা ঘটবে, ভিডিও করবে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরবে, জাতির সামনে বিএনপিকে মাথা নত করতে বাধ্য করবে। এমন চিন্তাধারা করেছিল। এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় যে ধরা পড়েছে, মাহিন (মাহমুদুল হাসান মাহিন) নামে একটা ছেলে। এই ছেলের সঙ্গে এনসিপি নেতৃবৃন্দের ছবি আছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, তারা বিএনপির ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।বিএনপিকে আওয়ামী লীগের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, আর একটি দল লম্বা লম্বা কথা বলা ছাড়া, সুকৌশল ও কারচুপি ছাড়া, সুকৌশলে চাঁদা; তারা বলেন হাদিয়া। এই হাদিয়া নেওয়া ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। টাকা নিয়েছেন বিভিন্ন গ্রুপের কাছ থেকে, আর কোন কোন জায়গা থেকে টাকা নেওয়া হয় তা আমাদের জানা আছে, সব হিসাব হবে। গায়ের জোরে কথা বলেন, নিজের পায়ে জোর নেই।এরশাদের সময় এরশাদের কাঁধে ভর করেন, আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করেন, বিএনপির সময় বিএনপির কাঁধে ভর করেন। লম্বা লম্বা কথা বলেন। সুতরাং বিএনপি এখন একমাত্র মাথাব্যথা। বিএনপি যদি শেষ করে দেওয়া যায়, তাহলে উনারা রাজত্ব করতে পারবেন। সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনুর সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় মিছিল-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুবদলের সভাপতি এম মোনায়েম মুন্না, কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।