জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে করোনার টিকার বিশেষ কর্মসূচির প্রথম দিন গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রে খুব চাপ ছিল না। মূলত তিন দিনের সরকারি ছুটির কারণে রাজধানীর টিকা কেন্দ্রে তুলনামূলক মানুষের ভিড় কম ছিল। সারা দেশেও রাজধানীর মতো টিকা কেন্দ্রে চাপ ছিল তুলনামূলক কম।বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশে ৩১ মার্চ পর্যন্ত তিন কোটি ২৫ লাখ ডোজ করোনার টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।এই কর্মসূচির আওতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজের টিকা দেওয়া হচ্ছে। যাদের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর চার মাস পেরিয়ে গেছে, তারাও এখন বুস্টার ডোজ পাচ্ছে।গতকাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত মাসে গণটিকা দেওয়ার সময় যে রকম উপচে পড়া ভিড় ছিল, এবার তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই চলেছে টিকা কার্যক্রম। এবারের বিশেষ টিকা কর্মসূচি লম্বা সময় ধরে চলবে বলে চাপ কম এমনটা মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।গতকাল কুমিল্লার চান্দিনায় মহিচাইল ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আন্ত বিভাগের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সরকার দেশের ৮০ শতাংশ জনগণকে করোনার টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।মন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবেলায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা এগিয়ে। এ পর্যন্ত দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে আমরা টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের টিকা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় বিশেষ টিকাদান কর্মসূচির আওতায় গতকাল এক হাজার ২৬০ জন টিকা নেয়। এর মধ্যে ৮৫৬ জন নেন তৃতীয় ডোজ। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে ৪০৪ জন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রে টিকা নিতে আগ্রহীদের উপস্থিতি কম। কাউকে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিতে হচ্ছে না। যারা টিকা কেন্দ্রে এসেছে, তারা নির্বিঘ্নে টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছে।দেশে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়। দুই মাস পর ৮ এপ্রিল শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর তৃতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজের কার্যক্রম শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে এক দিনে ৭৬ লাখের বেশি টিকা দেওয়া হয়। পরে বিশেষ গণটিকা চলে। শুধু ২৬ ফেব্রুয়ারিই দেশে এক কোটি ২০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এই বিশেষ কর্মসূচি শুরুর আগে গত বুধবার পর্যন্ত করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে ১২ কোটি ৬৩ লাখ আট হাজার ৬৪৮ জন, যা মোট জনসংখ্যার ৭৪.১৬ শতাংশ। এ ছাড়া ৯ কোটি আট লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৩ জন পেয়েছে দ্বিতীয় ডোজ, যা মোট জনসংখ্যার ৫৩.৩৪ শতাংশ। আর তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ পেয়েছে ৫৫ লাখ ২৭ হাজার ৫৫১ জন।