সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাবিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে গবেষণা খাতভূমধ্যসাগর থেকে ৩৫ বাংলাদেশি উদ্ধারযুক্তরাজ্যে যাচ্ছে সীতাকুণ্ডের লিচুগাজায় ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলের হামলায় নিহত ১২১ ফিলিস্তিনি
No icon

ফি আদায়ে বেপরোয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

রাজধানীর ম্যাপল লিফ স্কুলে নবম শ্রেণিতে টিউশন ফি ৮ হাজার ৫৫০ টাকা। করোনা উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটি ৫০ টাকা ছাড় দিয়েছে। অন্যদিকে টিকাটুলির শেরেবাংলা মহিলা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিফিন ফিও আদায় করা হয়েছে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজে টিউশনের পাশাপাশি অন্যান্য খাতের ফি আদায় করা হয়েছে।উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শুধু বিলম্ব ফি মাফ করে অন্যান্য ফি শতভাগ আদায় করা হচ্ছে। আবাসিক স্কুল-কলেজগুলো শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়ার ফিও আদায় করছে। অথচ সব শিক্ষার্থী এখন বাসায় অবস্থান করছে।করোনাকালে এভাবে ফি আদায়ের কারণে নাভিশ্বাস উঠেছে অভিভাবকদের। মন্ত্রণালয়ের নির্লিপ্ততায় হতাশ তারা। দেশে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি।রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের চিত্র প্রায় একইরকম। ফি আদায়ে অনেকটাই রুদ্রমূর্তিতে আবির্ভূত হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ক্ষেত্রে নানা কৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠান ইউটিউবে পাঠ তুলে (আপলোড) দিচ্ছে।কোনো প্রতিষ্ঠান মেসেঞ্জারে বা হোয়াটসঅ্যাপে আর কোনোটি জুমে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া ফেসবুকে শিক্ষকের পাঠদানের ভিডিও তুলে দেয়া হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, কিছু প্রতিষ্ঠান অনলাইনে পরীক্ষাও নিচ্ছে।

গোটা অর্থ পরিশোধ না করলে এ পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হচ্ছে না। অভিভাবকরা বলছেন, করোনায় স্কুল-মাদ্রাসা ও কলেজ বন্ধ থাকায় পানি, বিদ্যুৎ, আপ্যায়নসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় বন্ধ আছে। শুধু শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান আবার টিউশন ফি অনাদায়ি দেখিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের আংশিক বেতন-ভাতা দিয়েছে।এমন পরিস্থিতিতে এভাবে ফি আদায় অনৈতিক এবং অবৈধ হিসেবে উল্লেখ করেন তারা। পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার এ ব্যাপারে নির্লিপ্ত। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না দেয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো অভিভাবকদের এক ধরনের শোষণ করছে।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ইতিপূর্বে অভিভাবক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উভয়পক্ষকে এ ব্যাপারে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। আমাদের প্রত্যাশা ছিল উভয়পক্ষ মানবিক হবে। অভিভাবকরা শিক্ষকের বেতন-ভাতা অব্যাহত রাখার স্বার্থে প্রয়োজনীয় ফি পরিশোধ করবেন।

আর টিফিন বা হোস্টেল চার্জসহ যেসব খাতে শিক্ষার্থীকে সেবা দেয়া যায়নি সেই ফি প্রতিষ্ঠান নেবে না। কিন্তু সেবা না দেয়া খাতে ফি আদায় অনাকাক্সিক্ষত। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে বলব। তবে উচ্চ আদালতে এ নিয়ে মামলা বিচারাধীন থাকায় উদ্যোগ নিয়েও আদেশ জারি করা যায়নি।অভিভাবকদের অভিযোগ, অনলাইনে এসব পাঠ আর পরীক্ষার বেশির ভাগই নামমাত্র। শিক্ষার্থীরা এর থেকে তেমন একটা উপকৃত হচ্ছে না। এরপরও অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইন ক্লাস আর পরীক্ষাকে জিম্মি করার হাতিয়ার বানিয়েছে। পাওয়া অর্থ পরিশোধ না করলে ক্লাসের লিঙ্ক দেয়া হচ্ছে না। ফি আদায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অনেকটাই বেপরোয়া।