ডেঙ্গুতে সারা দেশে চলতি বছর ঝরতে পারে ৪০ হাজার প্রাণ থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সফর শেষে আজ দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রীহিট অ্যালার্টেও স্কুল, নগণ্য উপস্থিতির অনেকে অসুস্থদুর্নীতি ও লুটপাট লুকিয়ে রাখতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে : রুহুল কবির রিজভীবাংলাদেশসহ ছয় দেশে সীমিত পরিমাণে পিঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারত
No icon

পণ্যমূল্য আরও বাড়বে খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা

প্রকৃতির বিরূপ আচরণের কারণে এমনিতেই বিপাকে রয়েছেন কৃষক। চলতি বছর দুই দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ আবাদ। নষ্ট হয়ে গেছে রোপা আমনের বীজতলাও। এদিকে ভরা বর্ষা মৌসুমেও নেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি। অনাবৃষ্টিতে সৃষ্ট খরার কারণে পিছিয়ে গেছে রোপা আমনের চাষ। এমন অবস্থায় কৃষক সেচ দিয়ে আমন ক্ষেত প্রস্তুত করছেন। সেখানে আবার বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ডিজেল। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে কৃষি উপকরণ, বীজ ও বালাইনাশক। শ্রমিকের বাড়তি মজুরি তো রয়েছেই। এসব কারণে এমনিতেই ফসলের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে বহুগুণ। এর ওপর নতুন যোগ হয়েছে ইউরিয়া সারের বাড়তি দামের বোঝা। এ অবস্থায় চালসহ কৃষিপণ্যের এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। কৃষকরা বলছেন, ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন নিয়ে তাদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারা জমির আবাদ কমানোর কথা ভাবছেন। ফলে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন কমে যাবে।ইউরিয়া সারের কেজিতে ৬ টাকা বৃদ্ধির ফলে উৎপাদনে প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক। সারের সুষম ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, কৃষকদের মধ্যে ইউরিয়া সার বেশি ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। এটি কমাতে ডিএপি সারের কেজি ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করা হয়েছে। এর ফলে ডিএপির ব্যবহার বাড়লেও ইউরিয়ার ব্যবহার কমেনি। এখন দাম বৃদ্ধির ফলে ইউরিয়ার ব্যবহার কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নাটোরের সিংড়ার কৃষক নাজিম উদ্দিন বলেন, এমনিতেই আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাহিল। এর ওপর সব রকমের কৃষি উপকরণের বাড়তি দাম, শ্রমিকের বাড়তি মজুরি। এখন ইউরিয়ার দাম কেজিপ্রতি ৬ টাকা বেড়েছে। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে আমরা আর কৃষিকাজে টিকে থাকতে পারব না। জামালপুরের ইসলামপুরের কৃষক সাদেক আলী বলেন, কৃষকের আর বাঁচন নাই। আমরা টিভিতে সব সময় দেখতাম কৃষিমন্ত্রী বলছে, সরকার সারের দাম বাড়াবে না। এখন তা হলে দাম বাড়ল কেন? আমরা কি করে জমিজমা চাষ করব? কোনো উপায় দেখছি না!ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে খাদ্যনিরাপত্তা নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশের (খানি) সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ বলেন, ইউরিয়া সারের দাম বৃদ্ধিতে সরাসরি কৃষি ও কৃষকের ওপর প্রভাব পড়বে। এতে বাড়বে উৎপাদন খরচ। বেশির ভাগ কৃষকই দেখা যাবে বেশি দামে সার কিনতে পারছেন না। সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে প্রান্তিক কৃষকের ওপর।কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, সারের দাম বাড়ানোর ফলে উৎপাদন কমে যাবে। খাদ্যনিরাপত্তা বিঘিত হবে। এ বছর ১০-১৫ লাখ টন চাল আমদানি হয়েছে। আগামীতে আমদানি আরও বাড়বে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে যেখানে খাদ্যশস্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে, সেখানে আমদানিও অনেকটা অনিশ্চিত। কাজেই চাল আমদানিতে নির্ভরশীল না হয়ে উপকরণের দাম কমিয়ে রেখে উৎপাদন বাড়ানোই হলো যুক্তিযুক্ত কাজ।