দুর্নীতি ও লুটপাট লুকিয়ে রাখতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে : রুহুল কবির রিজভীবাংলাদেশসহ ছয় দেশে সীমিত পরিমাণে পিঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারততাপপ্রবাহের মধ্যেই আজ খুলছে স্কুল-কলেজযুদ্ধবিরতি সম্পর্কে ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পেলো হামাসঝুম বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলো সিলেটে
No icon

অর্থপাচার থেকে কর ফাঁকি কী করেননি প্রভাবশালীরা

গ্রিক পুরাণ অনুযায়ী দেবরাজ জিউস বিশেষ এক বাক্স উপহার দিয়েছেন প্যান্ডোরা নামের প্রথম মানবীকে। প্যান্ডোরার প্রতি নিষেধ ছিল- যেন সে বাক্স না খোলে; কিন্তু কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে প্যান্ডোরা সে বাক্স খুলতেই তার ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসে রোগ, দুঃখ, হিংসা, অসাধুতাসহ নানা মন্দ বিষয়। যা দেখে প্যান্ডোরা সে ঝাঁপি বন্ধ করলেও ততক্ষণে তাবৎ মন্দ ছড়িয়ে যায় মানুষের মধ্যে। এ গল্পের পুরোটাই গ্রিক পুরাণকথা হলেও সাংবাদিকরা যেন হঠাৎই পৃথিবীর সামনে খুলে দিয়েছেন বাস্তবের প্যান্ডোরার বাক্স। আর তা থেকে বেরিয়ে আসছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভদিমির পুতিন, জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ, চিলির প্রেসিডেন্ট সাবাস্তিয়ান পিয়েরা, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেই ববিস, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম অলিয়েভ, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ অনেক রাষ্ট্রপ্রধান, ব্যবসায়ী, গায়িকা, অভিনেতা-অভিনেত্রী, খেলোয়াড়দের কর ফাঁকি থেকে শুরু করে অবৈধ অর্থসহ নানা কেলেঙ্কারির তথ্য। গত সাত বছরে প্যারাডাইস পেপার্স, পানামা পেপার্স ইত্যাদি নামে যেসব গোপন দলিলপত্র ফাঁস হয়েছে, এই প্যান্ডোরা পেপার্স হচ্ছে তার সবশেষ ঘটনা, যা এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় আর্থিক দলিলপত্র ফাঁস।

বিবিসি প্যানোরামা, ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এবং আরও কিছু মিডিয়া অংশীদার মিলে প্যান্ডোরা পেপার্স নামে বিশ্বের ১৪টি কোম্পানির এই ১ কোটি ২০ লাখ দলিলপত্র হাতে পেয়েছে। এ দলিলপত্রগুলো উদঘাটন করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)। এতে দেখা গেছে- ৯০টি দেশের ৩৩০ জনের বেশি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, গায়িকা, অভিনেতা, খেলোয়াড় তাদের সম্পদের তথ্য গোপন রাখতে অফশোর কোম্পানি ব্যবহার করেছেন। প্যান্ডোরা পেপার্সের মধ্য দিয়ে ৬৪ লাখ নথি, ৩০ লাখ ছবি, ১০ লাখের বেশি ই-মেইল এবং প্রায় ৫ লাখ হিসাবের নথি উন্মোচন হয়েছে। আইসিআইজে বলছে, প্যান্ডোরার নথি হয়তো বিশ্ব নেতাদের সরাসরি দোষী সাব্যস্ত করতে পারবে না। তবে এই প্রমাণ তাদের ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে লজ্জাজনক। কেন না এসব রাষ্ট্রনেতা কোনো না কোনো সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। আর এখন এরাই দুর্নীতির দায়ে পড়েছেন।