সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাবিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে গবেষণা খাতভূমধ্যসাগর থেকে ৩৫ বাংলাদেশি উদ্ধারযুক্তরাজ্যে যাচ্ছে সীতাকুণ্ডের লিচুগাজায় ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলের হামলায় নিহত ১২১ ফিলিস্তিনি
No icon

রোহিঙ্গা প্রশ্নে বিশ্বব্যাংক: কী করবে বাংলাদেশ?

উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানো বলতে একটি কথা আছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক রিফিউজি পলিসি রিভিউ ফ্রেমওয়ার্ক-নামে একটি পলিসি গ্রহণ করেছে। এই পলিসি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নাগরিকের সমমর্যাদা দিলে তারা বাংলাদেশকে ঋণ দেবে। ঋণের অন্যতম শর্ত হচ্ছে রোহিঙ্গাদের স্থানীয় বাজারসহ দেশের সর্বত্র অবাধে চলাচলের সুযোগ দিতে হবে ও তাদের বাংলা ভাষায় শিক্ষাদানেরও সুযোগ দিতে হবে।রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিকরণের জন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র নতুন কিছু নয়। এ ষড়যন্ত্রে বর্তমানে শুধু মিয়ানমার একাই অংশীদার না, বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য বিশ্বসংস্থাও এই ষড়যন্ত্রে যোগ দিয়েছে। রোহিঙ্গা গণহত্যা প্রশ্নে জাতিসংঘ, রিফিউজিসংস্থাসহ অন্যান্য কোনো বিশ্বসংস্থাই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এগিয়ে আসেনি। দায়সারা গোছের নিন্দা ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার মধ্য দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে।রোহিঙ্গাদের এই আইনগত স্বীকৃতিকে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকে জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। অপরাপর সব কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগও চালিয়ে যেতে হবে। রোহিঙ্গা প্রশ্নে বাংলাদেশর নৈতিক ও আইনগত দৃঢ় অবস্থান অব্যাহতভাবেই তুলে ধরতে হবে।

বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবের তিনটি মূল বিষয় হলো-(১) উদ্বাস্তুদের জন্য বাংলাদেশেই অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করা এবং (২) বাংলাদেশে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া। তৃতীয় শর্তটি হচ্ছে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো এবং গ্রহণকারী দেশের (বাংলাদেশ) সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যাতে করে নতুন উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হয়। তৃতীয় শর্তাংশে তারা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি ইনিয়ে-বিনিয়ে বলেছে বটে, তবে যদি তারা নিজ দেশে না যায় সেক্ষেত্রে গ্রহণকারী দেশের (বাংলাদেশের) সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যাতে করে নতুন আরও উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেয়া সম্ভব হয়। অর্থাৎ বিদ্যমান উদ্বাস্তুদের শুধু গ্রহণ করা নয়, নতুন আরো উদ্বাস্তু গ্রহণ করার সক্ষমতা বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে এই শর্তে। যেখানে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোই একমাত্র আইনগত ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান সেখানে বিদ্যমান রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করা ও সেই সঙ্গে আরও রোহিঙ্গা গ্রহণ করার সক্ষমতা বৃদ্ধির শর্ত যে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ তা বলাই বাহুল্য।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাখাইনে আরও যে ৬ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা তাদেরকে তাড়িয়ে দিতে বদ্ধ পরিকর। সে কারণেই বাংলাদেশের ওপর আগাম এই শর্ত চাপিয়ে দেয়ার পায়তারা। এই শর্ত গ্রহণ করলে আগামীতে বিশ্বব্যাংক বলবে, আমরা তো তোমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য সাহায্য করেছি এখন রোহিঙ্গাদের তোমরা গ্রহণ করো।২০১৭ সালের পর ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এদেশে অনুপ্রবেশ করে। এনিয়ে মোটের ওপর বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী এখানে অবস্থান করছে। ভুটানের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি একটি জনগোষ্ঠীর বোঝা আমাদের বইতে হচ্ছে। ভুটানের জনসংখ্যা ৮ লাখ আর বালাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখ রোহিঙ্গা।