এখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারএক সপ্তাহে ১১ হাজার প্রবাসীকে ফেরত পাঠাল সৌদিভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু, কমে যাচ্ছে দামখালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি১১৪ জনের লাশ তোলা হবে আজ
No icon

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। গতকাল রোববার তাঁর সিটিস্ক্যানসহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়। সেগুলোর রিপোর্ট ভালো। এমন অবস্থায় বিদেশ না নিয়ে দেশেই চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়া যায় কিনা, সে বিষয়েও ভাবছে মেডিকেল বোর্ড।খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত বোর্ডের একজন চিকিৎসক গতকাল রাতে বলেন, খালেদা জিয়া আগের চেয়ে সুস্থ আছেন। আমরা চেষ্টা করছি দেশেই চিকিৎসা দিতে। আমাদের বিশ্বাস, তিনি দেশের চিকিৎসাতেই সেরে উঠবেন। তাঁর অবস্থা এর চেয়ে বেশি ক্রিটিক্যাল ছিল। তখনও সেরে উঠেছিলেন। লন্ডন নেওয়ার প্রয়োজন না-ও হতে পারে। সিটিস্ক্যান, ইসিজিসহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়েছে। সেগুলোর রিপোর্ট ভালো।খালেদা জিয়াকে আর কতদিন সিসিইউতে রাখা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি নির্ভর করছে তাঁর শরীরিক উন্নতির ওপর। দেশি-বিদেশি চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান শয্যাপাশে থেকে চিকিৎসার বিষয়ে সমন্বয় করছেন। তিনি বেশ কয়েক দিন দেশেই থাকবেন।খালেদা জিয়া কথা বলতে পারেন কিনা জানতে চাইলে এ চিকিৎসক বলেন, কিছুটা বলার চেষ্টা করছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। তাঁর ছোট ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, দুই পুত্রবধূ সার্বক্ষণিক পাশে আছেন। তাদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথা বলার চেষ্টা করেন।

এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী রোববার রাতে বলেছেন, মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিলেই তাঁকে লন্ডনে নেওয়া হবে। যখনই বিএনপি চাইবে, তখন কাতার সরকার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করবে। এটা কোনো সমস্যা নয়। তিনি আরও বলেন, আমরা বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। আমি সকালে তাঁকে সিসিইউতে দেখে এসেছি। তিনি আগের চেয়ে ভালো আছেন। সাড়া দিচ্ছেন। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হবে। লন্ডনে কোন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে, তা পরে ঠিক করা হবে।খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর জানানো হয়েছিল, গত জানুয়ারির মতো এবারও কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে লন্ডনে পাঠানো হবে।গত বৃহস্পতিবার বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার সকালে তাঁকে নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবে। তবে সেদিনই জানানো হয়, ডা. জোবাইদা রহমান ঢাকায় আসার পর তিনিও এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যাবেন। তবে শুক্রবার সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ওই দিন আসছে না।

এদিকে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ফ্লাইটকে ভিভিআইপি উল্লেখ করে শিডিউল অনুমোদন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে ফ্লাইট অবতরণের ক্লিয়ারেন্সও দিয়েছে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রোববার বিকেলে বেবিচক সূত্র জানায়, বিএনপির চেয়ারপাসনের জন্য যে এয়ার অ্যাম্বুলেসের ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেটি মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা। প্রাথমিকভাবে খালেদা জিয়াকে কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার কথা থাকলেও কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় কাতার বিকল্প এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেছে।বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ শনিবার বলেন, খালেদা জিয়াকে নিতে মঙ্গলবার ঢাকায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসবে; পরদিন ঢাকা ত্যাগ করবে। ভিভিআইপি মুভমেন্ট হিসেবে এ ফ্লাইটের ল্যান্ডিং থেকে টেকঅফ পর্যন্ত সব ধরনের নিরাপত্তা ও অপারেশনাল প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দীর্ঘদিন তিনি আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস ছাড়াও কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নেওয়া হয় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে।হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছে।