গোপালগঞ্জে হামলাকারীদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না : আইন উপদেষ্টাআমাদের শাসনামলে আবু সাঈদ হত্যার বিচার দেখে যাবেন: আসিফ নজরুলনিরাপদে গোপালগঞ্জ ছেড়েছেন এনসিপি নেতারাগোপালগঞ্জে ইউএনওর গাড়ি বহরে হামলা, ভাঙচুরদুপুরের মধ্যে ৭ জেলায় ঝড়ের আভাস
No icon

ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় মাঠে থাকবে বিএনপি

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে চলমান ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে বিএনপি। একই সঙ্গে সমাজবিরোধী দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থি কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি মামলাও করবে দলটি। বিএনপি নেতৃবৃন্দ মনে করে, মিটফোর্ড হত্যাকা- এবং এর জের ধরে তারেক রহমানের সুনাম ক্ষুণের ষড়যন্ত্র করা হয়। এর সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টিও জড়িত। তাই ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে দলটি। বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর একটি মহল বিএনপির গায়ে চাঁদাবাজ সহ নানা নেতিবাচক তকমা দেওয়ার চেষ্টা করে আসছে। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় তা সফল হচ্ছিল না। এরপর ষড়যন্ত্রকারীরা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী ও যুবদল কর্মী চাঁদ লাল সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি তারেক রহমানকে জড়িয়ে অশ্লীল স্লোগান ও বক্তব্য দেয়। মূলত তারেক রহমানের সুনাম ক্ষুণœ করতেই এই ষড়যন্ত্র করা হয়। এর সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টিও জড়িত। তাই, ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে বিএনপি। তবে কারও পাতা ফাঁদে পা না দিয়ে ধৈর্য ও সতর্কতার সঙ্গে মাঠে থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে নেতাকর্মীদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে হাইকমান্ড।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, লন্ডন বৈঠকের পর যখন মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে একটা আশার সঞ্চার হয়েছে, তখনই কয়েকটি রাজনৈতিক মহল, কয়েকটি চক্র রাজনীতিকে ভিন্ন পথে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। এই চক্রান্তকারীরা দেশকে আবার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। অকথ্য ভাষায় তারেক রহমানকে নিয়ে তারা কথা বলছে, স্লোগান দিচ্ছে। তারা ভেবেছিল এর ফলে বিএনপি ঘরে ঢুকে যাবে। বিএনপি সেই দল, যারা বারবার সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানান, পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে দলটির নেতাকর্মীরা। এতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারাও খুশি। তারা মনে করেন, স্বল্প সময়ের নোটিশে গত সোম ও মঙ্গলবার ঢাকাসহ সারা দেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী-সমর্থকদের সুশৃঙ্খল বিক্ষোভ দলের ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করেছে। এর মাধ্যমে তারা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলার বার্তা দিয়েছেন।

এদিকে একই সঙ্গে লন্ডন বৈঠকের ঘোষণাপত্রের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুত দেশকে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ফেরাতে চায় বিএনপি। সেই লক্ষ্য নিয়েও নেতারা কাজ করছেন। এ ছাড়া রাজধানীর মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকা-ের অন্তর্নিহিত কারণ অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত ও তথ্যানুসন্ধানী কমিটি দ্বারা সত্য উদঘাটন করে দলটি জনসম্মক্ষে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।অন্যদিকে পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য মিটফোর্ডের হত্যাকা-কে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নে ব্যবহত হচ্ছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মনে করেন দলটির নেতারা। তাদের মতে, শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে দলীয় পদ থেকে অপসারণের এমন দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপকে স্বাগত না জানিয়ে পরিকল্পিতভাবে চরিত্র হনন; দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। হত্যাকা-ের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুত কার্যকর করার বিষয়ে বিএনপির দলীয় অবস্থান সুদৃঢ় এবং অপরিবর্তিত। মিটফোর্ড হত্যাকা- নিয়ে যারা রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট ও জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় এবং প্রকারান্ত ফ্যাসিবাদ উত্থানের পথ সৃষ্টি করতে চায়, তাদের চিহ্নিত করা ও প্রতিহত করাও প্রয়োজন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, জিয়াউর রহমানের অনুকম্পায় দু-একটি ইসলামি দল রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে। তারাই এখন তারেক রহমান ও বিএনপিকে টার্গেট করেছে। বুক-পিঠ বলে তাদের কিছু নেই। তারা দেশে নতুন করে অশান্তি ও অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। মব জাস্টিসের নামে বিশৃঙ্খলা ছড়াচ্ছে। দেশের জনগণ জানে কারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে, ইসলামের নাম নিয়ে কারা সুযোগসন্ধানী কাজ করে। কিন্তু বিএনপি একটি গণমুখী দল। কোনো ষড়যন্ত্রেই কাজ হবে না।বিএনপি নেতাদের মতে, সোহাগ হত্যাকা- নিয়ে জনমনে বেশ কিছু প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। এই হত্যাকা-ের ঘটনা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার হচ্ছে কিনা এবং এর মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘিত করতে বিশেষ কোনো মহলের প্ররোচনায় এ ঘটনাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। সরকার পরিচালনার দায়িত্বে না থাকা সত্ত্বেও বিএনপিকে দায়ী করে বিক্ষোভ মিছিল ও অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কণ্ঠস্বরের প্রতিধ্বনিই।বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে ঐক্যবদ্ধ জাতিকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ আজ উ;ে§াচিত। এই অপরাজনীতি প্রতিহত করার ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতা দেখানোর সুযোগ নেই। আমরা আশা করি, দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অবনতির ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে দায়িত্বশীল সব রাজনৈতিক দল সচেতন হবে। রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত এ জাতীয় কর্মকা-ের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ বাধাগ্রস্ত হলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।