বজ্রসহ শিলা বৃষ্টি হতে পারে যেসব অঞ্চলে আজ শুরু হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করা হবে আজবৃহস্পতিবার থেকে কমতে পারে তাপমাত্রা, শুরু হবে বৃষ্টিঅনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
No icon

জামায়াতে ইসলামীর কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা ও আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানি ৬ নভেম্বর

দলের নিবন্ধনসংক্রান্ত মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মিছিল-সমাবেশসহ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে করা আবেদনের শুনানি আগামী ৬ নভেম্বর। এছাড়া, জামায়াতের নিবন্ধনসংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন থাকাবস্থায় দলটি নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগে করা আলাদা আবেদনটিরও শুনানি হবে একই দিন। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ শুনানির এই দিন ধার্য করেন জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে গত জুনে পৃথক দুটি আবেদন করেন হাইকোর্টে রিটকারী মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ তিনজন। আবেদনে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ করার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সভা, জনসভা বা মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ১০ বছর পর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগে আনা হয়।

আদালত অবমাননার আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে জামায়াতের আমির ডা.শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ড. গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লা মোহাম্মদ তাহের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, নায়েবে আমির হেলাল উদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো: মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার খোন্দকার গোলাম ফারুককে। গত ২৬ জুন আবেদন দুটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় আবেদন দুটি আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর এবং সাথে ছিলেন আইনজীবী সাফওয়ান করিম। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট অন-রেকর্ড জয়নাল আবেদীন তুহিন। পরে তানিয়া আমীর বলেন, আমাদের দুটি আবেদন। একটি নিষেধাজ্ঞার, অপরটির আদালত অবমাননার। আমরা শুনানিতে দাঁড়ানোর আগে একজন আইনজীবী জামায়াতের সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর জন্য আট সপ্তাহের সময় চেয়ে আবেদন করেন। তখন আদালত কড়াভাবে বললেন, ‘উনি (এ জে মোহাম্মদ আলী) কী আদালত আছেন ডিজিটাল যুগে আদালতের সামনে স্ক্রিন আছে। সব জানা যায়। আমরা সময় দিতে প্রস্তুত না। তখন আমি বললাম, আগস্টেও ওনারা সময় চেয়েছেন। এরপর আমরা জামায়াতের বর্তমান নেতাদের বিবাদী করে যে আবেদন করেছিলাম। সেটি উপস্থাপন করি। আদালত সেটি মঞ্জুর করেছেন।’

তিনি আরো বলেন, আদালত বলছেন যে ওনাদের হাত অনেক লম্বা। আর সময় দেবেন না। এরপর ৬ তারিখ শুনানির জন্য রেখেছেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট আবেদন করেন তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ টু আপিল করে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। পরে হাইকোর্ট দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের প্রস্তুতি নিতে দলটিকে দুই মাস সময় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে জামায়াতকে আদালতে সংক্ষিপ্ত বিবরণী জমা দিতে বলা হয়। পরে তারা আদালতে সারসংক্ষেপ জমা দেয়।

সূত্র : ইউএনবি