ডেঙ্গুতে সারা দেশে চলতি বছর ঝরতে পারে ৪০ হাজার প্রাণ থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সফর শেষে আজ দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রীহিট অ্যালার্টেও স্কুল, নগণ্য উপস্থিতির অনেকে অসুস্থদুর্নীতি ও লুটপাট লুকিয়ে রাখতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে : রুহুল কবির রিজভীবাংলাদেশসহ ছয় দেশে সীমিত পরিমাণে পিঁয়াজ রপ্তানি করবে ভারত
No icon

হজ শেষে জামারায় নিক্ষিপ্ত পাথর কী করা হয়

হজের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে জামারায় কয়েক বার ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ অন্যতম। ১০ জিলহজ মুজদালিফা থেকে মিনায় এসে বড় জামরায় প্রথমে সাতটি পাথর নিক্ষেপ করে। পরবর্তী তিন বা দুদিন (১১, ১২ বা ১৩ জিলহজ) তিন জামারায় তারা সাতটি করে মোট ৪২টি বা ৬৩টি পাথর নিক্ষেপ করেন। এভাবে সব হাজিকে মোট ৪৯টি বা ৭০টি পাথর নিক্ষেপ করতে হয়।

এ বছর ১৮ লাখের বেশি হজযাত্রী হজ পালন করেছেন। এই হিসেবে গত ১ জুন (১৩ জিলহজ) পর্যন্ত এবারের হজে ১০ কোটির বেশি পাথর জামারায় নিক্ষেপ করা হয়েছে। হজযাত্রীদের সংখ্যা অনুপাতে নুড়ি পাথরের পরিমাণ অনুমান করা হয়। অনেকের জিজ্ঞাসা করে থাকে, জামারায় নিক্ষেপের পর এত পাথর কোথায় যায়? বা পরবর্তীতে এসব পাথর দিয়ে কী করা হয়?

সৌদি গেজেট জানায়, ১৩ জিলহজ পাথর নিক্ষেপের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে সব হাজি মিনা প্রান্তর ছেড়ে চলে যায়। এরপর সুবিশাল স্থানটি আগামী হজ পর্যন্ত জনশূন্য হয়ে পড়ে থাকে। সব হাজির চলে যাওয়ার পর এসব পাথরের সংগ্রহ প্রক্রিয়া শুরু হয়। মূলত হাজিরা পাথর নিক্ষেপের পর জামারাতের চার স্তর থেকে তা ১৫ মিটার নিচে চলে যায় এবং বেসমেন্টে গিয়ে জমা হয়। এরপর একটি বিশেষ বেল্টের সাহায্যে সিভিং প্রক্রিয়ায় নিক্ষিপ্ত সব পাথর সংগ্রহ করা হয় এবং পানি স্প্রে করে পাথরের গায়ে জমে থাকা ধুলো ও ময়লা দূর করা হয়। অতঃপর পরিষ্কার পাথরগুলো গাড়িযোগে অন্যত্র নিয়ে পরবর্তী হজে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করা হয়।

সৌদি আরবের আবাসন প্রতিষ্ঠান কিদানা ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির সহযোগিতায় মক্কাভিত্তিক সংস্থা গিফট চ্যারিটেবল অ্যাসোসিয়েশন পাথর পুনঃব্যবহারের প্রক্রিয়ারসহ হজের স্থানগুলোর উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মিনায় জামারাত ব্রিজ সংলগ্ন রোডে হজযাত্রীদের পাথরভর্তি থলে সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়াও মুজদালিফাতে প্রায় ৩০০টির বেশি পয়েন্টে এসব তা সরবরাহ করা হয়।

দীর্ঘ তিন বছরের করোনা বিধি-নিষেধ শেষে এবারই প্রথম বৃহৎ পরিসরে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্বের দেড় শতাধিক দেশ থেকে সর্বমোট ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন অংশ নেন। তাঁরা গত ২৭ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান, মুজদালিফায় রাত্রিযাপন, মিনায় তিন দিন পাথর নিক্ষেপ, পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ এবং সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানোসহ হজের পুরো আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। যাঁরা হজের আগে মদিনায় যাননি, তাঁরা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতে যাচ্ছেন। প্রতিবছর ৯ জিলহজ আরাফাতের দিন পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তনের রীতি থাকলেও গত বছরের মতো এবারও সেই দিন গিলাফ পরিবর্তন করা হয়নি। বরং ১৪৪৫ হিজরির ১ মহররম (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৯ জুলাই) তা পরিবর্তন করা হবে।

আজ সন্ধ্যা থেকে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয়েছে। আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান, সৌদিয়া এয়ারলাইনস ও ফ্লাইনাস এয়ারের ৩২৫টি ফ্লাইটে করে হজযাত্রীরা দেশে ফিরবেন। গত ২১ মে থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে হজ পালন করতে সৌদি আরব গেছেন এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন। তাঁদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪২ পুরুষ, ১১ নারীসহ মোট ৫৩ হাজি মক্কা, মদিনা, মিনা এবং আরাফায় মারা গেছেন।

সূত্র : সৌদি গেজেট